সঠিক নিয়মে ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি 2023

সঠিক নিয়মে ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি

ফাইভার মার্কেটপ্লেসে অনেকেই সেলার একাউন্ট খুলেছেন ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য। কিন্তু নতুন হিসেবে বুঝতে পারছেন না যে ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি কি। আপনিও যদি এমন একজন হয়ে থাকেন তবে আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।

আজ আমি আপনাদের বলব, সঠিক নিয়মে ফাইভাবে কিভাবে গিগ তৈরি করতে হয়। নীতিমালা অনুসরণ করে একটি মানসম্পন্ন গিগ আপনার ফাইভার যাত্রাকে অনেক সুখময় করতে পারে।

অনেকেই আছেন গিগ তৈরি করতে গিয়ে বিভিন্ন ভুল করে ফেলেন এবং তার ফলশ্রুতিতে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ঝামেলায় পড়েন। আবার এমনও হয় যে, ভুলের কারণে ফাইবার গিগ গুলোকে প্রকাশ করতে দেয় না।

আরো পড়ুনঃ ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায় ও কৌশল

তাই সঠিক নিয়ম ফলো করে ফাইবার গিগ তৈরি করা খুবই জরুরি। ফাইভারে কীভাবে একটি গিগ তৈরি করবেন তার সহজ নির্দেশিকা নিচে উপস্থাপন করা হলো।

ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি

প্রথমেই আপনার Fiverr অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে হবে। যদি ফাইভার একাউন্ট না থাকে তবে ফাইভার একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন।

ফাইভারে একটি গিগ প্রকাশের পুরো বিষয়বস্তু স্টেপ বাই স্টেপ নিচে দেওয়া হলো। –

০১. আপনার ইমেল এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে https://www.fiverr.com/ এ যান।

০২. স্ক্রিনের উপরের ডানদিক থেকে আপনার Profile এ যান। প্রোফাইলে যাওয়ার পর আপনার সামনে নিচের ছবির মতো একটি অপশন চলে আসবে।

ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি

০৩. এখন “Create a new Gig” এ ক্লিক করুন। উপরের ছবিতে তীর চিহ্ন দিয়ে দেখানো হয়েছে।

Create a new Gig এ ক্লিক করার পর আপনাকে ৬ টি স্টেপ পূরণ করতে হবে। সেগুলো হলো –

  • Overview
  • Pricing
  • Description & FAQ
  • Requirements
  • Gallery
  • Publish ইত্যাদি।

উপরোক্ত ৬ টি স্টেপ যেভাবে পূরণ করতে হবে। –

ফাইভাবে কিভাবে গিগ তৈরি করতে হয়০৪.  সুন্দর ও শর্ট একটি ‘গিগ টাইটেল’ তৈরি করুন, তারপর গিগ এর ক্যাটাগরি / সাব ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন এবং গিগ এর জন্য কয়েকটি কিওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন।

০৫. গিগ এর প্রাইসিং বা মূল্য নির্ধারণ করুন। ফাইভারের প্রত্যেকটা গিগে তিনটি প্যাকেজ থাকে, যথা -BASIC,  STANDARD এবং PREMIUM ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ ফাইবার গিগ মার্কেটিং করার সেরা কৌশল সমূহ

এই তিনটি প্যাকেজের আলাদা আলাদা ফিচার এবং মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে। সাধারণত BASIC এর মূল্য কম, STANDARD প্যাকেজ এর মূল্য মেডিয়াম এবং PREMIUM প্যাকেজ এর মূল্য বেশি করে দেওয়া হয়।

০৬. গিগ ডেসক্রিপশন দিতে হবে। গিগ ডেসক্রিপশনে আপনার গিগ এর বিস্তারিত ফিচারের বর্ণনা দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

মনে করুন আপনি WordPress Website তৈরি নিয়ে গিগ তৈরি করতে চাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইট তৈরির বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে দিতে পারেন। যেমন-

ওয়েবসাইট তৈরিতে আপনি কোন কোম্পানির হোস্টিং এবং কত জিবি হোস্টিং ব্যবহার করবেন, কী ধরণের ডোমেইন ব্যবহার করবেন, ওয়েবসাইটে প্রিমিয়াম থিম বা প্রিমিয়ার প্লাগইন ব্যবহার করবেন কিনা এই বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করে দিন ডেসক্রিপশনে।

০৭. গিগ রিলেটেড FAQ যুক্ত করুন। মনে করুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন ক্যাটাগরিতে লোগো ডিজাইনের উপর গিগ তৈরি করবেন। এখন লোগো বা গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর সাম্ভাব্য প্রশ্ন গুলোর উত্তর FAQ সেকশনে যুক্ত করে দিন।

আপনি যদি লোগো ডিজাইন নিয়ে কাজ করেন, তবে আপনার কোনো ক্লাইন্ট বিজনেস কার্ড, কভার প্রচ্ছদ ডিজাইন বা ব্যানার ডিজাইন পারেন কিনা তা নিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করতেই পারে।

FAQ সেকশন দেওয়ার মানে হলো সাম্ভাব্য এমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর আগে থেকেই দিয়ে রাখুন। এটা গিগ র‌্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ক্লাইন্ট পেতে সাহায্য করে।

০৮. গিগ এর Requirements গুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করুন। ধরুন আপনি অনপেজ এসইও নিয়ে কাজ করেন। এক্ষেত্রে রিকোয়ারমেন্ট হলো ক্লাইন্ট এর ওয়েবসাইটের লগইন এক্সেস দিতে হবে।

কেননা, অনপেজ এসইও মূলত ওয়েবসাইটের ভেতরের কাজকে বুঝানো হয়। আর এজন্য গিগ এর Requirements গুলো সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করতে হবে। ক্লাইন্ট যেনো আপনার গিগ থেকে কোনো ভাবেই বিভ্রান্ত নাহয়।

০৯. গিগ এর মাধ্যমে ছবি বা ভিডিও যোগ করে আপনার গিগকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলুন। ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৩টি ছবি ব্যবহার করুন আর একটি ভিডিও।

১০. সবশেষ গিগ Publish করুন। তবে তার আগে পুণরায় আপনার গিগটি কয়েকবার মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং দেখুন। গিগ প্রকাশের আগেই গিগ এর সকল ভুল সংশোধন করুন।

গিগ প্রকাশের পরে যদিও গিগ এডিট করা যায়, তবে প্রকাশের পর এমন করা কোনো ভাবেই উচিত নয়। আমি এই বিষয়ে সবাইকেই অনুৎসাহিত করি।

বিশেষ করে গিগ যদি র‌্যাংক প্রায়, তখন যদি দেখতে পান যে আপনার গিগে কোনো ভুল আছে, তবুও এটা সংশোধন করা চেষ্টাও করবেন না। এতে র‌্যাংক হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই গিগ প্রকাশের আগেই গিগ এর সকল ইনফরমেশন নির্ভুল রাখুন এবং প্রয়োজনীয় ফিচার ও মূল্য সঠিকভাবে নির্ণয় করুন।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক, সঠিক নিয়মে ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে ফাইভারে একটি গিগ আপনি তৈরি করতে পারবেন।

সকলেই জানেন ফাইভারে নতুন সেলারগণ মাত্র ৭টি গিগ তৈরি করতে পারে। আপনি যদি ফাইভারে সহজেই বায়ার রিকোয়েস্ট পেতে চান, তবে একই ক্যাটাগরির উপর বিভিন্ন গিগ প্রকাশ করতে পারেন।

যাইহোক, আশাকরি সঠিক নিয়মে ফাইভাবে কিভাবে গিগ তৈরি করতে হয় তা আপনারা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। এই বিষয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

2 comments

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.