ই-পাসপোর্ট

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট 2023 | যারা যারা পাবেন

দক্ষিণ এশিয়ায় ই-পাসপোর্টের প্রথম ব্যবহারকারী বাংলাদেশ। পূর্বে এমআরপি পাসপোর্ট (Maching Readable Passport) এর সর্বোচ্চ মেয়াদ ছিল ৫ বছর। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর নাগরিকদের সুবিধার্থে ইতিমধ্যেই ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট দেওয়া শুরু করেছে।

এতোদিন প্রবাসী ও পাসপোর্টধারী বিভিন্ন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা পাসপোর্টের নবায়ন ঝামেলা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করে আসছিল। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এবার ১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্ট নেওয়া যাচ্ছে।

কিন্তু ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করা পাবেন এবং কারা পাবেন না, তা হয়ত আপনারও জানা না থাকতে পারে। তাই আপনাদের সুবিধার্থেই এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে।

আজ আমি আপনাদের বলব, ই পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদি ফি কত টাকা, কত পৃষ্ঠার হবে এবং কারা কারা এই পাসপোর্টটি পাবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট যারা পাবেন

বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছরের উপরে এবং ৬৫ বছরের নিচে তারাই কেবল ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট পাবেন।

বর্তমানে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ১০ বছরের মেয়াদে ২ ধরণের ই-পাসপোর্ট সরবারহ করছে। যেমন-

  • ৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট (১০ বছর মেয়াদ)
  • ৬৪ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট (১০ বছর মেয়াদ)

ই-পাসপোর্টের অনেক সুবিধা রয়েছে। আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের উপরে এবং ৬৫ বছরের নিচে হয়, তবে আপনি ১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যারা ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট পাবেন না

প্রায় সকলেই চায় ১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্ট করার জন্যে। কিন্তু সবাইকে ১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হয়না।

তারমধ্যে যারা একসাথে ১০ বছরের জন্য ই-পাসপোর্ট করতে পারবেন না, তারা হলেনঃ-

  • অপ্রাপ্ত বয়স্ক যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে।
  • প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদের বয়স ৬৫ বছরের উপরে।
  • সরকারি কর্মকর্তাগণ।
  • সরকারি কর্মকর্তাগণের অধীনস্থ ব্যক্তি বা শিশু।

উপরোল্লিখিত ব্যক্তিগণ শুধুমাত্র ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট পাবেন।

তবে সাধারণ ভাবে আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, উপরে বর্ণিত ব্যক্তিরা কেন ১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্ট পাবে না? এর কারণ কী?

১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্ট না পাওয়ার কারণ

অনেক ব্যক্তিরা এই বিষয়ে কথা বলেছেন এবং কারণও উল্লেখ করেছেন। তারমধ্যে একটি কারণ হলো-

১৮ বছরের কম বয়সী এবং ৬৫ বছরের উপরের লোকদের চেহারা ও শারিরীক গঠন পরিবর্তন হতে দেখা যায়। যা কয়েক বছরের পার্থক্যে পাসপোর্ট ইস্যুতে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করতে পারে।

আর একারণেই মূলত তাদেরকে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট দেওয়া হয় না।

প্রায় মানুষের ক্ষেত্রেই এমন হয় যে, ১০ বছর আগে তার চেহারা ও শারিরীক গঠন যেমন ছিল, ১০ বছর পর তার মধ্যে অনেক পরিবর্তন চলে আসে।

এর ফলে বিদেশে ভ্রমণের জন্য ভিসা পাওয়া এবং ইমিগ্রেশন প্রসেস সম্পূর্ণ করতে একটু জটিলতা তৈরি হয়। কেননা, পাসপোর্টে চেহারাগত মিল এবং শারিরীক গঠনের মিল থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

তবে অদূর ভবিষ্যতে হয়ত প্রযুক্তিগত ভাবে পাসপোর্টে আরও উন্নত আপডেট ও পরিবর্তন আসবে এবং তাদের জন্যও পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট ফি

১০ বছরের মেয়াদে ই-পাসপোর্ট গুলোর ফি ৩ ভাগে বিভক্ত, যা ডেলিভারির সময়ের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, আপনি যদি সাধারণ নিয়মে পাসপোর্ট করতে চান তবে পাসপোর্ট ফি কম।

আর যদি জরুরি অথবা অতি জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট করতে চান, তবে পাসপোর্ট ফি বেশি দিতে হবে। যেমন-

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছরের মেয়াদ সহ ই-পাসপোর্ট

২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ ৫,৭৫০/- টাকা।
১০ দিনের মধ্যে জরুরি ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ ৮,০৫০/- টাকা।
২ দিনের মধ্যে অতি জরুরি ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ ১০,৩৫০/- টাকা।

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছরের মেয়াদ সহ ই-পাসপোর্ট

২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ ৮,০৫০/- টাকা।
১০ দিনের মধ্যে জরুরি ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ ১০,৩৫০/- টাকা।
২ দিনের মধ্যে অতি জরুরি ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ ১৩,৮০০/- টাকা।

বাংলাদেশে পাসপোর্টের যাত্রা শুরু ১৯৭৩ সালে। যা ছিল অনেকটা অনুন্নত। তারপর ২০০৯ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) বিতরণ শুরু হয়।

সর্বশেষ ২০২০ সালে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হয়। আগের সকল পাসপোর্ট থেকেই ই-পাসপোর্ট অনেক সিকিউর এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি। পাশাপশি এর মেয়াদও ডাবল হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ

প্রিয় পাঠক,আমি চেষ্টা করেছি ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট এর সমস্ত তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা জন্য। পাসপোর্ট ফি এবং কারা কারা এই পাসপোর্ট পাবেন তাও বলেছি।

আপনার যদি ১০ বছরের মেয়াদে পাসপোর্ট করার সুযোগ থাকে, তবে তাই করবেন। এতে করে আপনি অনেক গুলো সুবিধা পাবেন। তারমধ্যে টাকাও কম লাগবে এবং পাসপোর্ট নাবয়নেরও তেমন চিন্তা থাকবে না।

যাইহোক, পাসপোর্ট বিষয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আমি যথাসাধ্য আপনাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবো ইনশাআল্লাহ।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে, তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
× How can I help you?

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker!