ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন থেকে আয়ের জন্য খুবই চমৎকার একটি প্লাটফর্ম হলো ইউটিউব। বর্তমানে ইউটিউব থেকে আয় করে এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। আপনিও চাইলে ইউটিউবে বিভিন্ন ধরণের ভিডিও প্রকাশ করে আয় করতে পারেন। এখানে ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সম্পর্কে বলা হয়েছে।
টেকজুরি এর তথ্যমতে ইউটিউববে প্রতিদিন ৩.৭ মিলিয়ন ভিডিও নতুন করে আপলোড হয়। যা মিনিটের হিসেবে, প্রতি মিনিটে ২৫০০ ভিডিও এবং গড়ে এই ভিডিও গুলোর ডিউরেশন ৫০০ ঘন্টা।
বুঝতেই পারছেন ইউটিউবে কত বেশি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরগণ কাজ করেন। ইউটিউবে এত এত প্রতিযোগী থাকার পরও সফল ইউটিউবারদের সংখ্যা অগণিত। নতুন করেও অনেক ইউটিউবার তৈরি হচ্ছে। অনেকের প্রশ্ন জাগতে পারে, ইউটিউব থেকে কত আয় করা যায়?
ইউটিউবারদের আয় কত?
বাংলাদেশি ইউটিউবার এবং বিদেশি ইউটিউবারদের আয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ইউটিউব থেকে আয় করার যে উপায় গুলো রয়েছে, তারমধ্যে গুগল এডসেন্স, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট, ডোনেশন ও পণ্য বিক্রয় ইত্যাদি।
বাংলাদেশি ইউটিউবারদের ভিডিও গুলোতে গুগল এডসেন্সের লো ভ্যালু এড এবং কম বাজেটের স্পন্সরশিপ থাকে। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামেও বাংলাদেশিদের খুব অল্প লোকই কাজ করে। ডোনেশন নেই বললেই চলে, পণ্য বিক্রয়েও সফলতার হার কম।
অন্যদিকে বিদেশি ইউটিউবাররা ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য প্রায় সব ধরণের সুবিধা পেয়ে থাকে, এজন্য বাংলাদেশিদের তুলনায় তাদের অনেক ইনকাম তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।
বিদেশি দুইজন জনপ্রিয় ইউটিউবার, জেফরি স্টার এবং জ্যাকলিন হিল। জেফরি স্টার এর ইউটিউব চ্যানেলে বর্তমান সাবস্ক্রাইবার ১২.৭ মিলিয়ন এবং জ্যাকলিন হিল এর ইউটিউব চ্যানেলে ৫.৮ মিলিয়ন।
- পড়ুন: ইউনিক ইউটিউব চ্যানেলের নাম (১০ টি ক্যাটাগরির আইডিয়া)
জেফরি স্টার তার ১২.৭ মিলিয়নের ইউটিউব চ্যানেলের আয়ের পরিমাণ ৫ মিলিয়ন ডলার এবং জ্যাকলিন হিল এর ৫.৮ মিলিয়নের চ্যানেলের আয় ১.৫ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশিদের মধ্যেও অনেকেই ভালো করছে। যেমন – Sohag360, same zone, khalid farhan ইত্যাদি ইত্যাদি। তাদের মাসিক ইউটিউব আয় ৫ হাজার ডলার থেকে ১২ হাজার ডলারের আশেপাশে।
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায়
ইউটিউব ক্রিয়েটরেরা ইউটিউব থেকে কি কি পদ্ধতিতে আয় করতে পারে তার জনপ্রিয় ৫ টি পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
বিজ্ঞাপন থেকে আয়
গুগল বিজ্ঞাপণ হলো ইউটিউব থেকে আয় করার সবচেয়ে সাধারণ উপায়। যখন একজন দর্শক আপনার ভিডিও দেখে, তখন বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করে। আপনি যত বেশি ভিউ পাবেন, তত বেশি অর্থ আপনি উপার্জন করবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়
ইউটিউবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দিতে হবে। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলো আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বা পরিষেবার প্রচারমূলক লিঙ্ক প্রদান করে।
যখন একজন দর্শক আপনার দেওয়া প্রচারমূলক লিঙ্ক ব্যবহার করে একটি পণ্য বা পরিষেবা ক্রয় করে, তখন আপনি তা থেকে একটি কমিশন পাবেন।
স্পনসরশিপ এর মাধ্যমে আয়
আপনি যদি একটি বড় চ্যানেল তৈরি করতে পারেন, তাহলে আপনি বড় কোম্পানিগুলি থেকে স্পনসরশিপ পেতে পারেন। স্পনসরশিপ হল এমন একটি চুক্তি যেখানে একটি কোম্পানি আপনাকে তাদের পণ্য বা পরিষেবাগুলির বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য অর্থ প্রদান করে।
নিজস্ব পণ্য বা পরিষেবার মাধ্যমে আয়
আপনার যদি নিজস্ব কোন পণ্য বা পরিষেবা থাকে, তাহলে আপনার দর্শকদের কাছে তা ইউটিউব চ্যানেলকে ব্যবহার করে বিক্রি করতে পারবেন।
আপনি আপনার চ্যানেলের বিভিন্ন ভিডিওতে আপনার পণ্যগুলো সম্পর্কে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন, অথবা আপনি আপনার চ্যানেলটিকে একটি অনলাইন স্টোর হিসেবে সেট আপ করতে পারেন।
ডোনেশন
আপনার কন্টেন্ট কোয়ালিটি যদি উচ্চ মানের হয়, তবে আপনার চ্যানেলে ডোনেশন অপশনটি চালু করতে পারেন। এটার মাধ্যমে আপনার দর্শকরা আপনার ভিডিওগুলো দেখে আপনাকে অর্থ ডোনেশন করতে পারে, এবং আপনি সেই অর্থ আপনার পছন্দের যেকোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারেন।
শেষ কথা
ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য আপনার চ্যানেলকে অবশ্যই বিভিন্ন ভাবে মনিটাইজ করতে হবে। মনিটাইজ করার যেই ধাপগুলো রয়েছে তা পূরণ করার পর আপনার চ্যানেল থেকে আয় শুরু হবে।
চ্যানেলকে গন্তব্যে পৌঁছাতে উচ্চমানের ভিডিও তৈরি করতে হবে যা আপনার দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়। তাছাড়া, চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে।
এই ব্লগের বিষয় ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় পুণরায় সংক্ষেপে বলছি। ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করার জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলো হলো – গুগল এডসেন্স, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট, ডোনেশন ও পণ্য বিক্রয় ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমে ইউটিউবাররা চ্যানেল থেকে আয় করে থাকে।
Add comment