Expert Option কি এবং কিভাবে কাজ করে?

Expert Option কি এবং Expert Option কিভাবে কাজ করে

প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইন ট্রেডিং অনেক দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।  ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন ইনকামের সাথে যারা যুক্ত রয়েছেন, তাদের কম-বেশি সকলেই এক্সপার্ট অপশন ট্রেডিং (Expert Option Trading) নামটির সাথে পরিচিত। কিন্ত Expert Option কি এবং কিভাবে কাজ করে তা আমাদের বেশিরভাগ মানুষই জানে না।

Expert Option হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন ধরণের আর্থিক সম্পদের উপর ট্রেড করার সুযোগ করে দেয়। যা অনেকটা লটারি বা জুয়া খেলার মতো। এই ব্লগ পোস্টে, আমরা Expert Option এর হালাল-হারাম, বৈশিষ্ট্য, সুবিধা এবং এর ঝুঁকিগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করবো।

Expert Option কি?

Expert Option হলো একটি অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরণের আর্থিক সম্পদের উপর ট্রেড করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ফরেক্স (Forex): বিভিন্ন মুদ্রা যেমন USD/EUR, GBP/JPY ইত্যাদি।
  • স্টক (stock): বিশ্বের বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার।
  • কমোডিটি (Commodity): তেল, সোনা, রূপা ইত্যাদি।
  • ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency): Bitcoin, Ethereum, Litecoin ইত্যাদি।

Expert Option ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম সবার জন্যই উন্মুক্ত এবং এটি ব্যবহার করা সহজ। আবার এটিতে অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে যার ফলে নতুন এবং অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীরা এটিকে সহজেই ব্যবহার করতে পারে।

Expert Option এর বৈশিষ্ট্য:

১. নিম্নতম জমা: এক্সপার্ট অপশন ট্রেডিং (Expert Option Trading) করার জন্য মাত্র $10 ডিপোজিট করলেই শুরু করা যায়।

২. ডেমো অ্যাকাউন্ট: ঝুঁকি ছাড়াই ট্রেডিং অনুশীলন করার জন্য একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট।

৩. বিভিন্ন ধরণের অ্যাকাউন্ট: আপনার চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন ধরণের অ্যাকাউন্ট Expert Option – এ পেয়ে যাবেন।

৪. 24/7 কাস্টোমার সাপোর্ট: আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে আপনি Expert Option এর 24/7 গ্রাহক সহায়তা নিতে পারবেন।

Expert Option কিভাবে কাজ করে?

Expert Option প্ল্যাটফর্মে ট্রেডিং করার জন্য প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর সেই অ্যাকাউন্টে অর্থ ডিপোজিট করা যায় এবং তা দিয়ে ট্রেডিং শুরু করা যায়।

ট্রেডিং করার জন্য প্রথমে একটি সম্পদ নির্বাচন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, USD/EUR মুদ্রা ইত্যাদি। এর মানে হলো আপনি বিশ্বাস করেন যে USD এর মূল্য EUR এর বিপরীতে বৃদ্ধি পাবে।

সহজ ভাষায়, ট্রেডিং মানে হলো বাজি ধরা। ধরুন আপনার কাছে আমেরিকান ১০০ ডলার আছে। ডলার হলো একটি মুদ্রা ব্যবস্থা। আর এটা সকলেই জানেন, যে কোনো মুদ্রার দাম অন্য মুদ্রার বিপরীতে প্রতিনিয়তই কম-বেশি হয়।

এখন কেউ যদি বাজার বিশ্লেষণ করে মনে করে যে, আমেরিকান ১০০ ডলার (USD) থেকে ইউরো (EUR) এর মূল্য আগামী ৭ দিনে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

আর তখন যদি কেউ তার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে $100 বাজি ধরে একটি ট্রেড শুরু করে, যদি তার পূর্বাভাস সঠিক হয়, তবে সে ট্রেড থেকে লাভ করবে। আর যদি তার পূর্বাভাস ভুল হয়, তবে ট্রেডে সে অর্থ হারাবে।

Expert Option দিয়ে ট্রেডিং করার ঝুঁকি:

Expert Option দিয়ে ট্রেডিং করার সময় বিভিন্ন ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

১. বাজারের ঝুঁকি: যে কোনো সময় আর্থিক বাজার অস্থির হতে পারে এবং আপনি অর্থ হারাতে পারেন।

২. প্রযুক্তিগত ঝুঁকি: ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ত্রুটি হতে পারে এবং আপনি ট্রেডের মাধ্যমে অর্থ হারাতে পারেন।

৩. মানবিক ঝুঁকি: ট্রেডিং করতে যেতে আপনি যদি ভুল সিদ্ধান্ত নেন তবে আপনি আপনার মূলধন (অর্থ) হারাতে পারেন।

ট্রেডিং কি হালাল?

ট্রেডিং হালাল কিনা তা নির্ভর করে কীভাবে ট্রেডিং করা হচ্ছে তার উপর। ইসলাম ধর্ম সুদকে হারাম করেছে, তাই ট্রেডিং যদি সুদের উপর ভিত্তি করে করা হয়, তবে তা হারাম হবে।

আবার ট্রেডিং হারাম হওয়ার কিছু কারণ হলো – সুদ, জুয়া ও অনিশ্চয়তা। ইসলাম কখনই এই তিনটি বিষয়কে বৈধতা দেয় না।

ট্রেডিং শুরু করার আগে:

  • ট্রেডিং সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করা উচিত।
  • ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।
  • রাস্ট্রীয় ভাবে ট্রেডিংয়ের বৈধতা আছে কি না তা জেনে নেওয়া উচিত।
  • ট্রেডিং শুরু করার আগে একজন আলেমের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ?

ট্রেডিংয়ের ধরণের উপর নির্ভর করে ট্রেডিং বাংলাদেশে বৈধ কিনা। যতদূর জানতে পারি, কিছু কিছু ট্রেডিং আছে বাংলাদেশে এর বৈধতা রয়েছে। যেমন –

বৈধ ট্রেডিং:

১. শেয়ার ট্রেডিং: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE) এ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার কেনাবেচা করা বৈধ।

২. বৈদেশিক মুদ্রা (Forex) ট্রেডিং: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যাংক এবং ডিলারদের মাধ্যমে Forex ট্রেডিং বৈধ।

৩. সোনার ট্রেডিং: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিপ্রাপ্ত ডিলারদের মাধ্যমে সোনার ট্রেডিং বৈধ।

৪. কমোডিটি ট্রেডিং: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (BSEC) অনুমোদিত প্ল্যাটফর্মে কমোডিটি ট্রেডিং বৈধ।

অবৈধ ট্রেডিং:

১. অনিয়ন্ত্রিত Forex ট্রেডিং: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া Forex ট্রেডিং অবৈধ।

২. বাইনারি অপশন ট্রেডিং: বাংলাদেশে বাইনারি অপশন ট্রেডিং অবৈধ।

৩. ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং: বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের আইনি অবস্থা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যতদূর জানি, এটাও অবৈধ।

উল্লেখ্য: উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো অনলাইন থেকে কালেক্ট করা এবং এগুলো শুধুমাত্র সাধারণ নির্দেশিকা হিসেবে নিতে পারেন। আর অবশ্যই ট্রেডিং শুরু করার আগে আইনি এবং শরীয়াহ পরামর্শ নেওয়া প্রত্যেকের জন্যই উচিত মনে করছি।

FAQs

এক্সপার্ট অপশন কি ট্রেড করা ভালো?

এক্সপার্ট অপশন ব্যবহার করে ট্রেড করা ভালো কিনা তা নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি, অভিজ্ঞতা এবং ঝুঁকি সহনশীলতার উপর। তবে শরীয়াহ ও আইনি জটিলতা থাকায় এক্সপার্ট অপশন ট্রেডিং (Expert Option Trading) না করাই উত্তম। আবার এটি একটি রিস্কি ইনভেস্টমেন্ট।

এক্সপার্ট অপশন হালাল নাকি হারাম?

এক্সপার্ট অপশন হালাল কিনা তা নির্ভর করে কীভাবে ট্রেডিং করা হচ্ছে তার উপর। ইসলাম ধর্ম সুদ, জুয়া ও অনিয়ন্ত্রিত/অনিশ্চয়তা বিষয়ক ইনভেস্টমেন্টকে হারাম করেছে, তাই এক্সপার্ট অপশন ব্যবহার করে ট্রেডিং যদি উক্ত বিষয়গুলো সাথে সামঞ্জস্যতা থাকে, তবে তা হারাম হবে।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.