
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের প্রথম পছন্দ থাকে ফাইভার (Fiverr)। এজন্য প্রায় সকলেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে ফাইভারকেই বেছে নেয়। কিন্তু নতুনদের অনেকেই জানে না কিভাবে ফাইভার একাউন্ট তৈরি করতে হয়।
আমরা লক্ষ করেছি ফেসবুক গ্রুপ এবং ওয়েবসাইটের কমেন্টে অনেকেই বলেন ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত বলার জন্যে। তাই এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে।
ফাইবার হলো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয়। এর কারণ হলো অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের তুলনায় এর কাজের ধরণ একটু ভিন্ন এবং নতুনদের জন্য সহজও বটে।
ফাইভার থেকে আয় করার জন্যে আপনার একটি সেলার একাউন্টের প্রয়োজন হবে। তারপর সেই সেলার একাউন্টে বিভিন্ন গিগ প্রকাশ করে বিশ্বের প্রায় যে কোনো দেশের বায়ারের সাথে কাজ করতে পারবেন।
আজ ফাইভার টিউটোরিয়ালের ১ম. ক্লাস। আমরা ফাইবার নিয়ে বিভিন্ন বিষয় পর্যায়ক্রমে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। ১ম ক্লাস ফাইভার একাউন্ট তৈরী প্রোফাইল তৈরী এবং একাউন্ট ভেরিফাই করার নিময় সম্পর্কে জানবো।
নতুন ফাইভার একাউন্ট তৈরির নিয়ম
Fiverr একাউন্ট তৈরি করার জন্যে প্রথমেই আপনার একটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব বা একটি মোবাইলের প্রয়োজন হবে। ইন্টারনেট সংযোগ করা একটি ডিভাইস এবং একটি সক্রিয় ইমেইল একাউন্ট থাকলেই আপনি ফাইভারে একাউন্ট খুলতে পারবেন।
তারপর সেই কাঙ্খিত ডিভাইসে যে কোনো একটি ওয়েব ব্রাউজার ওপেন করতে হবে। সবচেয়ে সুবিধাজনক ওয়েব ব্রাউজার হলো Google Chrome এবং Mozila Fire Fox. আমি Google Chrome Browser দিয়েই পুরো প্রসেসটা দেখাচ্ছি।
আপনি যদি মোবাইল থেকে ফাইভার একাউন্ট খুলতে চান, তবে Google Chrome ব্যবহার করুন এবং উক্ত ব্রাউজারের মেনু থেকে Desktop Site করে নিয়েন। তাহলে কম্পিউটারের মতই একাউন্ট খোলা সহজ হবে।
একটি নতুন ফাইভার একাউন্ট তৈরির জন্য যে ধাপগুলো আপনাকে অনুসরণ করতে হবে তা নিচে ছবিসহ বর্ণনা করা হলো। আপনার ফাইভার অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। –
প্রথমেই আপনি ব্রাউজারের সার্চ বক্সে Fiverr Acount Create লিখে সার্চ করুন অথবা সরাসরি ভিজিট করুন https://www.fiverr.com/
ফাইভার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর উপরের ছবির মতো একটি ওয়েবপেজ ওপেন হবে। একাউন্টটি খোলার জন্য ডানপাশের উপরে Join নামের বাটনে ক্লিক করুন।
Join বাটনে ক্লিক করার পর ফাইভার একাউন্টটি খোলার জন্য আপনি ৪টি অপশন পাবেন। যেমন-
- Continue with Facebook
- Continue with Google
- Continue with Apple এবং
- Email ইত্যাদি।
আপনি email ছাড়া উপরের তিনটির যে কোনো একটিকে ক্লিক করলেই ফাইভার একাউন্ট অটোমেটিক তৈরি হয়ে যাবে এবং সরাসরি আপনাকে ফাইভারের ডেশবোর্ডে নিয়ে যাবে।
তবে আপনি যদি প্রফেশনাল ভাবে ফাইভার একাউন্ট তৈরি করতে চান, তবে Email দিয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করে একাউন্টটি খুলুন। আমিও তাই রিকোমেন্ট করি।
এজন্য Enter your email এর স্থানে আপনার ইমেইল এড্রেসটি লিখুন এবং Continue বাটনে ক্লিক করুন।
Continue বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে উপরের ছবির মতো একটি পেজে নিয়ে যাবে। এখানে আপনার Username এবং Password দিতে হবে।
Username দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে সম্পূর্ণ ইউনিক একটি নাম দিতে হবে, যেই নামটি ইতোপূর্বে ব্যবহার করা হয়নি। ইউজার নামের ভিত্তিতেই আপনার একাউন্টের url তৈরি হবে।
ইউজার নাম দেওয়ার পর পাসওয়ার্ড দেবেন। পাসওয়ার্ডে কমপক্ষে ৮টি ক্যারেক্টার দিতে হবে। আমি রিকোমেন্ট করি পাসওয়ার্ড অবশ্যই লেটার, সংখ্যা এবং বিভিন্ন চিহ্ন দিতে তৈরি করবেন। যেমন- PasS#[email protected]$20%G*8
ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর Join বাটনে ক্লিক করুন।
সাজেশনঃ আপনি যেই ক্যাটাগরি নিয়ে ফাইবারে কাজ করতে চাচ্ছেন, চেষ্টা করবেন সেই ক্যাটাগরিতে আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ডটি ব্যবহার করে Username নামটি দেওয়ার। এতে করে আপনার একাউন্টের url চমৎকার ভাবে অপটিমাইজ হয়ে যাবে।
ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে Join বাটনে ক্লিক করার পর আপনার ইমেইলে Fiverr থেকে একটি লিংক পাঠানো হবে। এটি মূলত আপনার ফাইবার একাউন্ট ভেরিফাই পদ্ধতি।
ফাইবার একাউন্টটি ভেরিফাই করার জন্য আপনার ইমেইলে প্রবেশ করুন এবং Active your account বাটনে ক্লিক করুন।
ইমেইল থেকে Active your account বাটনে ক্লিক করলেই আপনার ফাইবার একাউন্টটি ভেরিফাই হয়ে যাবে। এখন আপনি ফাইভারে নতুন নতুন গিগ তৈরি করতে পারবেন।
তবে গিগ তৈরির আগে আপনার একাউন্টে প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন যুক্ত করুন। প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন বলতে আপনার নাম, ছবি, স্কিল বা অভিজ্ঞতা এবং আপনার নিজের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হবে।
তাছাড়া স্কিল টেস্ট দিতে হবে, ক্যাটাগরি সিলেক্ট, ভাষা ও লোকেশন সিলেক্ট এবং আপনার ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করে ফাইভার একাউন্টকে পরিপূর্ণ করতে হবে।
শেষ কথাঃ
প্রিয় পাঠক, বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারই ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। তাই নতুনদের মধ্যেও ফাইভারে কাজ করার আগ্রহ তুমুলভাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ফাইভার মার্কেটপ্লেস টার্গেট করে যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন, আশাকরি ফাইভার একাউন্ট তৈরি করার নিয়মটি জানতে পেরে আপনারা সকলেই উপকৃত হবেন।
তবে আমি পার্সোনালি সবাইকেই রিকোমেন্ট করবো, আপনি যদি কাজের আগ্রহ নিয়ে ফাইভার একাউন্ট তৈরি করেন তবে খুবই ভালো। আর যারা টেস্টিং পারপাসে করার ট্রাই করতে চাচ্ছেন, তাদেরকে বলব এমনটা করবেন না।
ফাইভার ইদানিং বাংলাদেশ – ইন্ডিয়া সহ এশিয়ার বেশকিছু দেশের ফ্রিল্যান্সারদের প্রতি ক্ষিপ্ত! তাই UpWork এর মতো যেনো Fiverr খুব বেশি কঠিন হয়ে না পড়ে। এতে নতুনদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে যাবে।
যাইহোক, ফাইভার বিষয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন, পরামর্শ বা মতামত থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করুন। আমরা যথাসাধ্য আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
আমার কম্পিউটারে ডিভাইস ফাইবার একাউন্ট ভেরিফাই
করেছে কি তা চেক করব কি ভাবে
একটি ডিভাইস দিয়ে একটা একাউন্ট খোলা যায় এই জন্য
প্রিয় পাঠক, ফাইভার একাউন্ট ভেরিফাই করা খুবই সহজ। ভেরিফাই করার ধাপগুলো অনুসরণ করুন, তাহলে একাউন্ট ভেরিফাই হয়ে যাবে। ফাইভার একাউন্ট ভেরিফাই হয়ে গেলে আপনি নিজেই তা দেখতে পাবেন।