নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি

নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি জেনে নিন

নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি না জানার কারণে অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং এর চমৎকার একটি সেবা থেকে বিচিহ্ন। আপনার যদি একটি নগদ একাউন্ট থাকে তবে আপনি নিশ্চিন্তে ঘরে বসেই বাংলাদেশের যে কোন স্থানে টাকা আদান-প্রদান করতে পারবেন। অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে জানেন, তবে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানেন না। তাদের জন্যই এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে।

সাধারণত আমরা বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতা নিয়ে নগদ একাউন্ট খুলতে যাই। অথবা নগদের কাস্টমার সাপোর্টে গিয়ে নগদ একাউন্ট খুলে নিই। তবে একথা সত্য যে, নিজের কাজটা নিজেই করতে পারলে এর মাঝে একটি ইউনিকনেস এবং আনন্দ থাকে। প্রাইভেসি নিয়েও তেমন সমস্যা হয় না। তাই আজ আমি নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো।

যারা প্রশ্ন করেন কিভাবে নগদ একাউন্ট করব? তারা যদি আমাদের সাজেশন ফলো করেন তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি নগদ একাউন্ট খুলতে পারবেন। যাইহোক, চলুন জেনে নিই নগদ একাউন্ট কিভাবে খোলা যায়?

নগদ কি?

নগদ হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগের একটি ডিজিটাল আর্থিক সেবা। যেটা বিকাশ বা রকেট এর মতই মোবাইল ব্যাংকিং এর একটি ডিজিটাল অর্থ লেনদেন প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে খুব সহজেই দেশের যে কোন প্রান্তেই মূহুর্তে টাকা লেনদেন করা যায়।

নগদ অফিসিয়ালি ভাবে ২০৮ সালের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ অবদি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি জানার আগে নগদ আমাদের জন্য কি কি সুবিধা প্রদান করতে তা জেনে নেওয়া যাক।

নগদ একাউন্ট এর সুবিধাসমূহ

সকলেই জানেন মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমটি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রায়ী লেনদেন প্রক্রিয়া। নগদ তেমনী একটি মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম। যেটার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই দেশের যে কোন প্রান্তে টাকা লেনদেন করতে পারবেন।

নগদ বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হওয়ায় লেনদেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবসময় ভালো থাকবে বলেই মনে করি। তাছাড়া, নগদ এর ক্যাশ আউট চার্জ তুলনামূলক ভাবে দেশের অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর চেয়ে কম।

বিকাশ এবং রকেটের মতই নগদ তাদের বিভিন্ন সার্ভিস অফার করছে। প্লে-স্টোর এবং অ্যাপল স্টোরে তাদের নিজস্ব অ্যাপ রয়েছে। যা আপনার লেনদেনকে আরো সহজ করে তোলবে।

নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি

নগদ একাউন্ট খোলা এখন অনেক সহজ। ন্যাশানাল আইডি কার্ড ছাড়াই নগদ একাউন্ট খোলা যায়। আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন যে, বিকাশ এবং রকেট একাউন্ট খুলতে ন্যাশানাল আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়। তবে নগদের বেলায় এমন কিছু বাধ্যবাধকতা নেই। তবে পার্সোনালি  রিকোমান্ড করি, যাদের ন্যাশানাল আইডি কার্ড আছে, তারা ন্যাশানাল আইডি কার্ড ব্যবহার করেই নগদ একাউন্ট খুলবেন।

৩ টি ধাপ অনুসরণ করে নগদ একাউন্ট খোলা যায়

  • *167# ডায়াল করে। (এক্ষেত্রে ন্যাশানাল আইডি কার্ড প্রয়োজন নেই)
  • নগদ অ্যাপের মাধ্যমে। (এক্ষেত্রে ন্যাশানাল আইডি কার্ড প্রযোজ্য)
  • নগদ এর যেকোনো এজেন্টের মাধ্যমে। (এক্ষেত্রে ন্যাশানাল আইডি কার্ড প্রযোজ্য)

ধারাবহিকভাবে উপরোল্লেখিত ৩ টি ধাপেই নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি দেখানো হবে।

*167# ডায়াল করে নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি

উপরোল্লেখিত ৩ টি ধাপের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ধাপ বা পদ্ধতি হলো *167# ডায়াল করে একাউন্ট খোলা। এই সহজ ধাপটি অনুসরণ করেই নগদ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করা হলো।

১. আপনার মোবাইল থেকে *167# ডায়াল করুন।

২. Carrier info নামের একটি উইন্ডো ওপেন হবে, শর্তাবলি পড়ুন এবং Enter New PIN এর জায়গায় চার (৪) ডিজিটের পিন সেট করুন। উদাহরণতঃ ৬৭৩৯

৩. Confirm PIN -তথা পিনটি পুণরায় টাইপ করে কনফার্ম করুন।

৪. এরপর নগদ একাউন্ট থেকে মুনাফা পেতে চান কিনা তা বেছে নিন। মুনাফা পেতে ইচ্ছুক হলেছাপুন, ইচ্ছুক না হলে ২ ছেপে সেন্ড করুন।

৫. তারপর নগদ থেকে কয়েক মিনিটের ভেতর একটি ভেরিফিকেশন কোড বা নাম্বার পাঠাবে, আপনি সেই কোড বা নাম্বারটি দিয়ে নগদ একাউন্ট ভেরিফাই করে নিন।

হয়ে গেলো আপনার নগদ একাউন্ট তৈরি। এখন আপনি আপনার নগদ একাউন্ট দিয়ে লেনদের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।

অ্যাপ থেকে নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি

নগদ একাউন্ট ম্যানেজ করার জন্য নগদ এর অফিসিয়ালি অ্যাপ রয়েছে। এন্ড্রোয়েড এবং অ্যাপল ডিভাইসে অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে। আপনি যদি এড্রোয়েড মোবাইল ব্যবহারকারী হোন তবে গুগল প্লে-স্টোর থেকে Nagad App ডাউনলোড করে নিন, অ্যাপল মোবাইল ব্যবহারকারী হলে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর থেকে Nagad App ডাউনলোড করে নিন।

১. অ্যাপ ডাউনলোড হওয়ার পর অ্যাপ ওপেন করে আপনার ফোন নাম্বার সিলেক্ট করুন এবং প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

২. আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের উভয় পিঠের ছবি জমা দিন।

৩. নগদ একাউন্টে আপনার ছবি যুক্ত করতে হবে। সেল্ফি তুলে অথবা আপনার মোবাইলের গ্যালারি থেকে ছবি সিলেক্ট করে যুক্ত করুন।

৪. নগদ এর টার্মস এবং কন্ডিশনস পেজটি পড়ুন এবং সম্মতি জানান।

৫. আপনার সিগনেচার প্রদান করুন।

৬. নগদ থেকে আপনার সিম বা ফোন নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে, সেই কোডটি দিয়ে আপনার নগদ একাউন্ট ভেরিফাই করুন।

উপরোল্লেখিত বিষয়বস্তু যদি সঠিকভাবে প্রদান করে থাকেন, তবে আপনার নগদ একাউন্ট খোলা হয়ে গেছে। এখন আপনি চাইলে দেশের যে কোন প্রান্তেই নগদ ব্যবহারকারীদের সাথে লেনদেন করতে পারবেন।

এজেন্টর মাধ্যমে নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি

নগদ এজেন্ট বলতে, নগদ কোম্পানির নির্দৃষ্ট কোন চাকরিরত ব্যক্তিকে বুঝানো হয়। যারা নগদ নিয়ে প্রফেশনালি কাজ করে থাকেন। সাধারণত তারা নগদ বিষয়ে অভিজ্ঞ হবেন এবং নগদ এর সাধারণ ইউজাররা তাদের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকেন।

যারা নগদ এর এজেন্ট তারা দুটি ধাপ অনুসরণ করে ইউজারদেরকে নগদ একাউন্ট তৈরি করে দেন। তারমধ্যেঃ- () ইউএসএসডি ( USSD) কোড ব্যবহার করে। (২) নগদ এর অফিসিয়ালি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে।

তবে নগদ এজেন্টের মাধ্যমে “নগদ একাউন্ট” খুললে তারা সাধারণ ইউজারদেরকে আলাদা কিছু কাগজ বা একাউন্ট ডকুমেন্ট দেয়। এজেন্টের মাধ্যমে নগদ একাউন্ট খুলতে ন্যাশানাল আইডি কার্ড ও আপনার কপি ছবি নিয়ে নিকটস্ত কোন নগদ এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করুন।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ

নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি খুব সাবলীল ভাবে ইতোমধ্যেই দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনার নগদ একাউন্ট আপনি নিজেই খুলতে চেষ্টা করবেন। পিন বা ভেরিফিকেশন কোড কাউকে দেবেন না। ইতোমধ্যেই যদি কারো মাধ্যমে নগদ একাউন্ট খুলে থাকেন, তবে পিন পরিবর্তন করে নিতে ভুলবেন না। নগদ একাউন্টের লেনদেনের প্রোফগুলো কাউকে দেখাবেন না।

আপনার নগদ একাউন্ট এর পুরো দায়িত্ব ও অধিকার আপনার উপরই ন্যস্ত। তাই অন্যকে এই দায়িত্ব দিতে যাবেন না। নগদ এর আপনার মোবাইল ব্যাংকিং যাত্রা কল্যাণময় হোক।

প্রিয় পাঠক, আমি আশা করছি নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন এবং আপনার নগদ একাউন্টটি আপনি নিজেই খুলতে পেরেছেন!

👉 এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করুন। আইটি নির্মাণ এর সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.