কামাখ্যা কিসের জন্য বিখ্যাত? (ইতিহাস ও ঐতিহ্য)

কামাখ্যা কিসের জন্য বিখ্যাত

ভারতের আসাম রাজ্যের কামাখ্যা অঞ্চলটি বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন ভাবে পরিচিত। কামাখ্যা নিয়ে লোকমুখে অনেক কথা প্রচলিত আছে। কিন্তু কামাখ্যা কিসের জন্য বিখ্যাত বা এটি কেন তীর্থস্থান হিসেবে মনে করা হয়, তাই আজ আমরা জানতে চলেছি।

কামাখ্যা হলো ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরের কাছে অবস্থিত একটি তীর্থস্থান। যেখানে হিন্দুদের কামাখ্যা মন্দির অবস্থিত। কামাখ্যা মন্দিরটি আসামের প্রাচীনতম হিন্দু মন্দিরগুলোর মধ্যে একটি।

কথিত আছে যে, এটি খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। মন্দিরের নির্মাণের সাথে বেশ কয়েকটি ইতিহাস জড়িত। একটি ইতিহাস অনুসারে, মন্দিরটি মহাদেবের স্ত্রী দেবী পার্বতী দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। অন্য একটি ইতিহাস অনুসারে, মন্দিরটি দেবী সতীর যোনি পড়েছিল এবং সেই জায়গায় মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল।

কামাখ্যা নামটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ “কাম” থেকে, যার অর্থ “প্রেম”। এই নামটি দেবী কামাক্ষ্যার প্রতীক, যিনি প্রেমের দেবী। দেবী কামাক্ষ্যাকে হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান দেবী হিসাবে পূজা করা হয়। তিনি সমস্ত নারীদের দেবী এবং তিনি তাদের সুখ ও সমৃদ্ধি প্রদান করেন বলে বিশ্বাস করা হয়।

কামাখ্যা কিসের জন্য বিখ্যাত?

কামাখ্যা বিখ্যাত হওয়ার প্রধান কারণ হলো কামাখ্যা মন্দির। যা ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরের কাছে অবস্থিত একটি হিন্দু মন্দির। এটি দেবী কামাক্ষ্যাকে উৎসর্গ করা হয়েছে, যিনি হিন্দুধর্মের শক্তি দেবতা বলে বিশ্বাস করা হয়।

কামাখ্যা মন্দিরটি হিন্দুদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান এবং এটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়।

কামাখ্যা মন্দিরটি একটি পাহাড়ের উপর একটি গুহায় অবস্থিত। গুহার মধ্যে একটি শিলাখণ্ড রয়েছে, যা দেবী কামাক্ষ্যার যোনি বলে মনে করা হয়। এই শিলাখণ্ড থেকে একটি অবিরাম জলধারা প্রবাহিত হয় যাকে দেবীর রক্ত বলে মনে করা হয়।

কামাখ্যা মন্দিরে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্তরা যায়। সেখানে গিয়ে ভক্তরা দেবী কামাক্ষ্যার কাছে প্রার্থনা করেন তাদের ইচ্ছা পূরণের জন্য।

কামাখ্যা মন্দিরটি একটি শক্তিশালী শক্তিপীঠ বলেও মনে করা হয় এবং ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, দেবী কামাক্ষ্যা তাদের সকল দুঃখ-কষ্ট দূর করে তাদেরকে সুখী জীবন দেন।

কামাখ্যা মন্দিরটি একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাথে জড়িত। কথিত আছে যে, এই মন্দিরের স্থানে দেবী সতীর যোনি পড়েছিল। দেবী সতী ছিলেন মহাদেবের স্ত্রী এবং তিনি স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিলেন।

দেবী সতীর দেহটি ৫১টি স্থানে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছিল এবং এই স্থানগুলোকে শক্তিপীঠ বলা হয়। কামাখ্যা মন্দিরটি হল এই শক্তিপীঠগুলোর মধ্যে একটি।

কামাখ্যা মন্দিরটি একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে একটি এবং এটি হিন্দুদের কাছে একটি পবিত্র তীর্থস্থান।

মোটকথা, কামাখ্যা মন্দিরটি একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাথে জড়িত এবং এটি একটি শক্তিশালী শক্তিপীঠ বলেও হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটিই কামাখ্যাকে বিখ্যাত রূপে প্রকাশ করে।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.