
টাকা আয় করার Apps : গুগল প্লে স্টোরে সাধারণ অ্যাপসের পাশাপাশি অগণিত টাকা ইনকাম করার অ্যাপস রয়েছে। যেই Apps গুলো দিয়ে আমরা অনলাইন থেকে আয় করতে পারি।
এই ধরণের মোবাইল Apps গুলোতে ছোট ছোট কাজ পাওয়া যায়। অ্যাপসে কাজ করে যেই টাকা ইনকাম হয় তা বিভিন্ন পদ্ধতিতে উঠানোও যায়।
এর মধ্যে যেই অ্যাপস গুলো বিদেশী, সেগুলো থেকে Bank Account, Coupon, PayPal Account বা বিভিন্ন Master Card এর মাধ্যমে ডলার হিসেবে বাংলাদেশে নিয়ে আসা যায়।
আর সেই অ্যাপস গুলো বাংলাদেশী বা ইন্ডিয়ান, সেই অ্যাপস গুলো থেকে bKash বা Mobile Recharge হিসেবে টাকা পাওয়া যায়।
কিন্তু মনে রাখবেন, Google Play Store এর মাধ্যমে যত Money Earning Android Apps রয়েছে, তার সবই কিন্তু ট্রাস্ট্রেড না, আবার সবাই কাজ শেষে পেমেন্টও করে না।
সুতরাং, টাকা ইনকাম করার অ্যাপস গুলোর মধ্যে যেই Apps গুলো কাজ করিয়ে টাকা দেয় না, সেই ধরণের টাকা আয় করার Apps থেকে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
পড়ার সাজেশনঃ
► লেখালেখি করে আয় করার নিয়ম
► কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো?
আমি প্রায় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ইন্টারনেট ভিত্তিক কাজের সাথে জরিত। এই দীর্ঘ পথ চলায় আমি অনলাইন ইনকাম এর বিষয়টা মোটামুটি বুঝতে পেরেছি।
যদিও আমি বর্তমানে নিজে কোন অ্যাপস থেকে ইনকাম করি না। তবে অ্যাপসে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে।
ঘরে বসেই অনলাইনে ইনকাম করা যায় এটা শতভাগ সত্য। আমি নিজেও করি।
তবে অ্যাপস বা ওয়েবসাইটে যেখানেই কাজ করেন না কেন, কাজ শুরু করার আগে কাঙ্খিত কাজের উপর পূর্ণ ধারণা রাখার চেষ্টা করবেন। তারপর কাজ শুরু করবেন।
টাকা ইনকাম করার অ্যাপ | টাকা আয় করার Apps
শুরুতেই কিছু অপ্রিয় সত্য কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
অনলাইনে টাকা আয় করার অ্যাপ অগণিত রয়েছে, সেগুলোর বেশীর ভাগ অ্যাপসে কাজ করে আপনি খুব ভালো ইনকাম করতে পারবেন না।
তবে এটা নিশ্চিত এন্ড্রয়েড ফোন দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।
বিষয়টিকে সহজ ভাবে বললে মোবাইলের অ্যাপস থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনি যেই সময়টা নষ্ট করবেন, তার যথাযথ পারিশ্রমিক আপনি পাবেন না।
গুগল প্লে স্টোরে এমন হাজার হাজার অ্যাপস রয়েছে, যেই অ্যাপস গুলোতে সারা মাস কাজ করে হয়ত মাস শেষে আপনার হাত খরচ বা মোবাইল খরচের এমাউন্ট আপনি অনলাইনে টাকা আয় করার অ্যাপ দিয়ে তুলতে পারবেন।
তবে অ্যাপস ও কাজের ধরণ অনুযায়ী টাকার অংকটা কম-বেশী হয়। আমি যেই অ্যাপগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি, সেগুলো শতভাগ ট্রাস্ট্রেড এবং কাজ শেষে পেমেন্ট করে।
পড়ার সাজেশনঃ
► ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার সেরা উপায়
► ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কতদিন লাগে?
ইন্টারনেটে যদি আপনি অনলাইন ইনকাম অ্যাপ বা টাকা ইনকাম করার অ্যাপস লিখে সার্চ দেন, তবে দেখবেন শত শত ওয়েবসাইট আপনার সামনে এসে হাজির।
এই আর্টিকেলটি লেখার আগে আমি এপস দিয়ে টাকা ইনকাম বিষয়ক বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়েছি।
অনেকেই একচেটিয়া ভাবে বিভিন্ন অ্যাপসের নাম তাদের আর্টিকেলে লিস্টেড করেছে। তবে আমি কাউকে ছোট করে কথা বলবো না।
আমি আমার ওয়েবসাইটের দর্শকদের বলবো, যে কোন ধরণের টাকা আয় করার Apps এ কাজ করার আগে অ্যাপ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে জেনে নিন।
কাজ শেষে যেনো কেউ কোন অ্যাপসের মাধ্যমের প্রতারিত নাহয়, এই বিষয়টির দিকে লক্ষ্য করে এমন কিছু ট্রাস্ট্রেড অ্যাপস এই আর্টিকেলটিতে লিস্টেড করেছি, যেন সকলেই উপকৃত হয়।
সতর্কীকরণঃ উল্লেখিত সবগুলো অ্যাপস আমি নিজে কখনও ব্যবহার করিনি। Apps গুলো সম্পর্কে ইন্টারনেটে থাকা রিভিউ (Review), Comments এবং Ratings এর উপর ভিত্তি করে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
অ্যাপসগুলোতে কাজ করার আগে অবশ্যই অ্যাপসগুলো নিয়ে আরো রিসার্চ করার অনুরোধ করি।
টাকা আয় করার Apps গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
Top 3 Android apps to earn money part-time
আমি যেই টাকা ইনকাম করার অ্যাপ গুলো নিয়ে কথা বলব, সেগুলোকে আপনারা অবশ্যই পার্ট টাইম জব হিসেবে নেবেন।
কেননা, অ্যাপসের মাধ্যমে যেই পরিমাণ আয় হয় তা কখনই ফুল টাইম জব হিসেবে নেওয়া যুক্তিযোগ্য নয় বা উচিত নয়।
উল্লেখিত প্রত্যেকটা অ্যাপস এর ওয়েব ভার্সন রয়েছে। অর্থাৎ ওয়েবসাইট রয়েছে। আপনি যদি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়ে এই অ্যাপস গুলোর ওয়েবসাইটে কাজ করেন, তবে হিসেব পাল্টে যাবে।
কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে কাজ করার সুযোগ থাকলে পার্ট টাইম নয়, নিশ্চিন্তে ফুল টাইম জব হিসেবে নিতে পারবেন।
অনলাইনে টাকা আয় করার অ্যাপ এর মাধ্যমে কাজ শুরু করার আগে আপনাকে জানতে হবে তারা কোন ধরণের কাজের ভিত্তিতে তারা টাকা প্রদান করে।
প্রত্যেকটি অ্যাপসের নিজস্ব টার্গেট রয়েছে। আপনি যেই অ্যাপসে কাজ করবেন প্রথমেই সেই অ্যাপসের বেসিক কনসেপ্ট আপনার জন্য জরুরি।
পড়ার সাজেশনঃ
► অনলাইনে ইনকাম বাংলাদেশী সাইট
► ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল নাকি হারাম?
অ্যাপস থেকে আয় করার জন্য সাধারণত Apps Referral, Apps Install করে, গেম খেলে এবং বিভিন্ন ভিডিও বা অ্যাড দেখার মাধ্যমে আপনাকে টাকা দেয়।
তবে আমি এই ধরণের কোন অ্যাপ এই লিস্টে রাখিনি। ওগুলো কোন ভাবেই আপনার উপকারে আসবে না।
চলুন এবার ট্রাস্ট্রেড কিছু টাকা ইনকাম করার অ্যাপ দেখে নিই।
৫. Google Opinion Reward

মোবাইলে টাকা আয় করার Apps হিসেবে Google Opinion Reward অ্যাপটি খুবই জনপ্রিয়।
এই অ্যাপসটি Google survey teem দ্বারা পরিচালিত হয়। যে কারণে এই অ্যাপস কে ট্রাস্ট্রেড বলা যায় এবং অ্যাপসটিকে কাজ করে অবশ্যই টাকা পাবেন।
Google Opinion Reward অ্যাপসের মূলত উদ্দেশ্য হলো Survey এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অংগ্রহণ করানো। Survey রিলেটেড কাজ গুলো যে কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ করতে পারবেন।
Apps টি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করার পর আপনার সাধারণ কিছু ইনফরমেশন দেওয়ার মাধ্যমে একটি একাউন্ট খুলতে হবে।
একাউন্ট খোলা খুবই সিম্পল। যা আপনি নিজেই করতে পারবেন।
Google Opinion Reward অ্যাপসটিতে ২৫ লক্ষ মানুষের রিভিও আছে। যার এভারেজ ৪.৫ Review.
Google survey teem এর অ্যাপসটিতে একাউন্ট করা পর প্রতি সাপ্তাহে আপনাকে কিছু Survey পাঠানো হবে। এই সার্ভে গুলোতে অংশ গ্রহণ করে কাজ সম্পূর্ণ করার পর আপনি প্রায় $১ ডলার পর্যন্ত গুগল প্লে ক্রেডিট পাবেন।
Google Opinion Reward অ্যাপসটি যদি আপনার মোবাইলে ইনিস্টল থাকে তবে প্রতি সাপ্তাহে Survey করার জন্য নোটিফিকেশন পাবেন।
টাকা আয় করার Apps গুলোর মধ্যে এই অ্যাপস এর কাজ সবচেয়ে ছোট এবং সহজ।
ডাউনলোড করুনঃ Google Opinion Reward
৪. Meesho App

টাকা ইনকাম করার অ্যাপ হিসেবে Meesho App কে এই লিস্টে রাখা যায়।
Meesho হলো Product Reselling টাইপের একটি অ্যাপস। এই অ্যাপসে আপনি যত কাজ করতে পারবেন তত বেশীই ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে।
Meesho অ্যাপসে প্রায় সব ধরণের Clothing Products রয়েছে। আপনি সেই প্রোডাক্ট গুলো Resell করে আয় করতে পারবেন।
অ্যাপসটিতে Sarees, Kurta, ladies tops, Suits ইত্যাদি ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট রয়েছে।
Meesho অ্যাপ এর কাজটা মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যাটাগরির।
আপনার এন্ড্রোয়েড মোবাইলে Meesho অ্যাপটি ইনিস্টল করে সাধারণ কিছু তথ্য দিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।
তারপর আপনার পছন্দ অনুযায়ী প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ যেই ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট আপনি মানুষের কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছেন।
প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার পর সেই প্রোডাক্ট গুলোর উপর আপনি নিজের পছন্দ অনুযায়ী একটি মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন।
মনে করুন, Meesho এর তরফ থেকে একটি টি-শার্ট এর মূল্য ধরা হয়েছে ১২০ টাকা। আপনি সেটাকে ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
আপনি আপনার পছন্দের প্রোডাক্ট গুলোর নতুন মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পর সেই প্রোডাক্টের লিংক আপনার গ্রাহকদের কাছে রেফার করবেন।
পড়ার সাজেশনঃ
► ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ কি কি?
► সেরা ১০ টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট
ধরুন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই প্রোডাক্টের লিংক শেয়ার করলেন, আপনার সেই লিংক থেকে যদি কেউ Meesho থেকে প্রোডাক্ট অর্ডার করেন, তবে প্রোডাক্টটি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব Meesho নেবে।
মাঝখানে আপনি Meesho থেকে প্রোডাক্টটি বিক্রি করে দেওয়ার কারণে আপনাকে তারা তাদের নির্ধারিত মূল্যের বাড়তি অংশটি দিয়ে দেবে।
Meesho কে ব্যবহার করে ঘসে বসেই আপনি নিজস্ব ই-কমার্স বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারবেন।
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, Meesho এর মাধ্যমে ই-কমার্স করতে আপনার নিজস্ব স্টক (Stock) এর প্রয়োজন হবে না।
গুগল প্লে স্টোরে Meesho অ্যাপ এর ৪.৪ রিভিউ (Reviews) রয়েছে। প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ Meesho অ্যাপটিকে রিভিউ করেছে।
টাকা ইনকাম করার অ্যাপ হিসেবে এটাকেও আপনি বেছে নিতে পারেন।
ডাউনলোড করুনঃ Meesho
৩. UpWork Data Entry App

বিশ্বের সকল ফ্রিল্যান্সারদের খুবই পছন্দের একটি মার্কেটপ্লেস হলো Upwork.
তবে আমি আপওয়ার্ক এর বড় কোন কাজের বর্ণনা দিতে চাই না।
মোবাইল দিয়ে Apps এর মাধ্যমে যেই কাজগুলো করতে পারবেন, আমি মূলত যেগুলোর কথাই বলবো।
Upwork অ্যাপে Data Entry টাইপের ছোট ছোট অনেক কাজ আছে, যা মোবাইলে দিলে আপনিও করতে পারবেন।
সুতরাং, টাকা ইনকাম করার অ্যাপ হিসেবে Upwork কেও এই লিস্টে রাখা যায়।
Upwork অ্যাপ এর যেই কাজগুলো মোবাইলে করা যায়।
(১) কন্টেন্ট রাইটিং করে আপওয়ার্ক অ্যাপ থেকে আয় করতে পারবেন।
(২) Article Translate বা অনুবাদ করে আপওয়ার্ক থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
(৩) বিভিন্ন data entry job করে আয় করতে পারবেন।
data entry টাইপের অনেক কাজ মোবাইলে দিয়েই করা যায়। যেমন: মাইক্রোসফট ওয়ার্ড থেকে PDF তৈরি করা, PDF বই থেকে লেখা txt ফাইলে কনভার্ট করা, Excel ফাইল থেকে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে ইনফরমেশন ট্রান্সফার করা ইত্যাদি।
(৪) ছবি এডিটিং এখন মোবাইলেও করা যায়। Upwork অ্যাপে ছবি এডিটিং এর উপর কাজ রয়েছে।
এমন আরো অনেক ছোট ছোট কাজ আছে, যা মোবাইলে দিয়েই করতে পারবেন।
পড়ার সাজেশনঃ
► ব্লগিং কিভাবে শিখব?
► জিমেইল আইডি কিভাবে খুলবো?
Upwork কতটুকু ট্রাস্ট্রেড তা আপনারা অবশ্যই জানেন। ফ্রিল্যান্সিং এর নাম আসলে প্রথমেই Upwork এর কথা বলা হয়।
গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপটির নাম Upwork for Freelancers.
অ্যাপটিতে প্রায় ৯২ হাজার রিভিউ রয়েছে। আপনি চাইলে টাকা আয় করার Apps হিসেবে Upwork কে বেছে নিতে পারেন।
ডাউনলোড করুনঃ Upwork for Freelancers
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ
প্রিয় পাঠক, আপনাদের সাথে যেই টাকা ইনকাম করার অ্যাপ গুলো শেয়ার করেছি। এগুলো ১০০% ট্রাস্ট্রেড। ইচ্ছে করলে আরো বিভিন্ন অনলাইনে টাকা আয় করার অ্যাপ এই লিস্টে তুলে ধরতে পারতাম।
তবে সেই অ্যাপগুলোর বিষয়ে আমরাই তেমন জানতে পারিনি, এজন্য প্রতারণার আংশকা করে আর সেই অ্যাপসগুলো আর্টিকেলটিতে লিস্টেড করিনি।
পরবর্তী আপডেটে এই লিস্টটি আরো দীর্ঘ করা হবে ইনশাআল্লাহ।
যাইহোক, আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি ফলো করে মোবাইল দিয়ে আয় করার চেষ্টা করেন তবে আশাকরি এপস দিয়ে টাকা ইনকাম করে সফল হবেন ইনশাআল্লাহ।
আমি আশাবাদী আপনারা এই আর্টিকেল থেকে উপকৃত হয়েছেন।
টাকা আয় করার অ্যাপ নিয়ে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আর্টিকেলটি উপকারী মনে হলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ