নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা গাইড ও নির্দেশনা

নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা গাইড ও নির্দেশনা

কম্পিউটার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি অঙ্গনেই অবদান রাখছে। শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রায় সব কিছুই এখন কম্পিউটার কেন্দ্রিক। তাই নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্বও বেড়েছে।

প্রযুক্তির এই যুগে এশিয়ার প্রায় দেশই কম্পিউটার শিক্ষায় অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, মায়ানমার ইত্যাদি। এর কারণ হলো দারিদ্র্যতা ও আর্থিক অসচ্চলতা।

পড়াশোনা ও গবেষণারও অনেক ঘাটতি রয়েছে। এজন্যই মূলত আমরা একটু পিছিয়ে গেছি।

তাছাড়া, আমাদের দেশে কম্পিউটার ব্যবহার নিয়ে সমাজের একশ্রেণির মানুষের মাঝে একটি ভ্রান্ত ধারণার প্রবণতা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন কম্পিউটার মানেই গান শোনা, মুভি দেখা, গেম খেলা ইত্যাদি।

কিন্তু কম্পিউটার যে শুধুমাত্র গান শোনা, মুভি দেখা বা গেম খেলার কাজেই সীমাবদ্ধ নয়, তা অনেকেই মানতে চায় না। যে কারণে অনেক পরিবারের আর্থিক সচ্চলতা থাকার পরও ছেলে-মেয়েদেরকে কম্পিউটার কিনে দেওয়া হয় না।

অন্যদিকে যারা কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব বুঝেছে, তারা কিন্তু বসে নেই। বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থাতেও গুরুত্বের সাথে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের প্রতি জোড় দেওয়া হচ্ছে।

কম্পিউটার কি এবং কেন?

Compute একটি গ্রিক শব্দ। এই শব্দ থেকেই Computer শব্দের উৎপত্তি। Compute শব্দের অর্থ গণনা করা আর Computer শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র।

কম্পিউটার আবিস্কারের প্রাথমিক লক্ষ্য ও মূলত উদ্দেশ্য ছিল সহজেই কোনকিছু গণনা করা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই গণনাকারী যন্ত্রটি বিশ্বকে বিষ্মিত করে দিয়েছে।

কম্পিউটার এমন একটি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা মানুষের দেওয়া তথ্য ও নির্দেশনাবলীর ভিত্তিতে কার্য সম্পাদন করে। কম্পিউটারের জনক বলা হয় চার্লস ব্যাবেজ এবং ড. হাওয়ার্ড এইচ আইকেনকে।

আপনি কম্পিউটার কেন শিখবেন?

কম্পিউটার শিক্ষা একটি দারুণ সম্ভাবনাময় স্কিলে পরিণত হয়েছে। এই স্কিলটি এতটাই জনপ্রিয় যে, আপনি চাইলে কম্পিউটার শেখার মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইন উভয় জায়গা থেকে আয় করতে পারবেন।

আপনি হয়ত আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং শব্দের সাথে ইতিমধ্যেই পরিচয় হয়েছেন। বর্তমানে আমাদের দেশের অনেক ছেলে-মেয়েরা এই কাজ গুলো করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে।

দেশের রিজার্ভে প্রতি বছর লক্ষ্য লক্ষ্য ডলার আসে এই কাজ থেকে। প্রবাসীদের মতো তারাও রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবেই খ্যাতি পেয়েছে।

শুধু তাই নয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই যুগে কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। কেননা, আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ে এতবেশি চাকরির অপর্চুনিটি রয়েছে, যা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি কম্পিউটার এজন্যই শিখবেন, কম্পিউটার কেন্দ্রিক কাজ শেখার মাধ্যমে নিজেই নিজের কর্ম সংস্থান তৈরি করা যায়। এমনটি সহজেই উদ্যোক্তা হওয়া যায়।

বর্তমানে গতানুগতিক চাকরি ক্ষেত্রেও কম্পিউটার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। স্বাভাবিক ভাবে কোনো কোম্পানি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠোনে চাকরি নেবার ক্ষেত্রে অনেকের কম্পিউটারের উপর নলেজ না থাকার কারণে চাকরি হয় না।

এজন্যই সময়ের সাথে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়তে কম্পিউটার শিক্ষার কিল্প নেই। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা দেখেছি কম্পিউটারের উপর পড়াশোনা চালু করা হয়েছে।

তবে আমাদেরকে এখানেই থেমে থাকা উচিত হবে না। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সারসরি ভাবে কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। তাছাড়া, যাদের সামর্থ আছে তারা অবশ্যই নিজ উদ্যোগে কম্পিউটার কিনে শিখুন।

আমরা চাই আগামীর বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে সারা বিশ্বের কাছে একটি মডেল হিসেবে পরিচিতি পাবে। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

কম্পিউটার শিখে কি কি করা যায়?

কম্পিউটার মূলত দুইটি বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত। প্রথমত হার্ডওয়্যার এবং দ্বিতীয়ত সফওয়্যার। হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটার মেশিনের যন্ত্রাংশ গঠিত এবং সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারের প্রোগ্রাম ফাংশন, অর্থাৎ, যেই ফাংশন দ্বারা কার্য সম্পাদন করা হয়।

আপনাকে আমি প্রথমেই হার্ডওয়্যার নিয়ে একবারে এডভান্স গবেষণার কথা বলবো না, আবার সফটওয়্যার তৈরির কথাও বলবো না। তবে আপনারা এই বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন, এটা দোষের কিছু নয়।

আর্টিকেলটি যেহেতু “নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা” বিষয়ক, তাই বিগেনার হিসেবে আপনাকে আমি বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার ভিত্তিক কাজ শেখার কথা বলবো।

কর্ম কেন্দ্রিক অনেক সফটওয়্যার রয়েছে। যেগুলো শিখে আপনি নিজের ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে পারবেন। এমন ২-৪ টি সফটওয়্যারের কাজ শিখে খুব সহজেই অনলাইন ও অফলাইনে চাকরি করতে পারবেন।

মূল প্রশ্নের আসি। কম্পিউটার দিয়ে কি কি করা যায়? এর উত্তর হলো সবই করা যায়। করোনা মহামারিতে নিশ্চই দেখেছেন শিক্ষায় কম্পিউটারের গুরুত্ব কতগুণ বেড়েছে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রেও কম্পিউটারের ব্যবহার অপরসীম। গবেষণা, কৃষি উন্নয়ন, ক্যারিয়ার গঠন, ব্যবসা ও চাকরি ক্ষেত্রেও কম্পিউটারের যথেষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। যা আপনারা নিজেরাই অনুমান করতে পারবেন।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক, প্রযুক্তি কেন্দ্রিক প্রায় সকল কাজেই কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। বরং হলফ করে এভাবে বলা যায় যে, কম্পিউটার ছাড়া প্রযুক্তিকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব। কেননা, সকল প্রযুক্তিই কম্পিউটার নির্ভর।

কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজ সহজ হয়েছে, সমৃদ্ধি এসেছে। কম্পিউটার এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে, একটি বই তৈরিতেও কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়।

পরিসংখ্যান ও গবেষণা থেকে একটি বিষয় উঠে আসে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কম্পিউটারের ব্যবহার মানুষের মাঝে এমন ভাবেই ছড়িয়ে যাবে যে, দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব কাজ কম্পিউটারের সাহায্যে সম্পাদন করা হবে।

উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে এখনই দেখা যায় ভারী সব কাজ রোবটের সাহায্যে সম্পাদন করা হয়। চালক বিহীন গাড়ি / ড্রোন, রকেট, স্যাটেলাইট ইত্যাদিতে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।

ব্যবসা ও বাণিজ্যিক দিকটা ইতিমধ্যেই অনেকটাই ইন্টারনেট ও কম্পিউটার নির্ভর হয়ে গেছে। আর এই সব কিছুর বিবেচনায় নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্বকে অপরিহার্য বলে মনে করি।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.