কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন? জেনে নিন

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

বর্তমান সময়ে ঘরে বসে অনলাইন ইনকাম এর সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো Freelancing. নতুনদের মাঝে এই বিষয়ে নানান প্রশ্নের উদ্ভব হয়। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায় এই ধরণের আরো বিভিন্ন প্রশ্ন।

আমি এই আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যেই তৈরি করেছি যারা Freelancing এর কাজ শিখতে চান।

Freelancing সেক্টরটি পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অনলাইন চাকরি। যেটার মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করে।

আপনি জানলে হয়ত অবাক হবেন, সারাবিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং ইন্ডিয়া প্রথম স্থানে রয়েছে।

আমিও সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং করি।

Freelancing শিখতে গিয়ে একটি সময় আমার মনেও বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছিল।

অনেক শ্রম দিয়ে এর পিছনে, শেখার আগ্রহ ও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এর লক্ষ্যে অনলাইন জগতে আমার প্রায় অভিজ্ঞতার দশ বছর।

আপনাদেরকে আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকেই ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর প্রদান করবো।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো তা জানার আগে শুরুতেই জেনে নিই ফ্রিল্যান্সিং কি বা কাকে বলে।

ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে?

ফ্রিল্যান্সিং হলো অনলাইন জব, যেটা ইন্টারনেটের সাহায্যে করতে হয়।

ফ্রিল্যান্সিংকে সম্পূর্ণ মূক্ত পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কারণ, Freelancing এমন এক ধরণের অনলাইন জব যা সমাজের যে কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ করতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিংও একটি চাকরি। তবে এটি সাধারণ কোন চাকরির মতো সময় নির্ধারণ নেই।

সাধারণত কোন চাকরি করার ক্ষেত্রে একটি সময় নির্ধারণ থাকে।

যেমন, সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বা নিয়মিত ১২ ঘন্টা ডিউটি ইত্যাদি।

তবে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে এই বিষয়টা পুরোই ভিন্ন।

অর্থাৎ, ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এভাবে কোন সময় নির্ধারণ নেই।

আপনার যখন খুশি তখন কাজ করতে পারবেন।

যত বেশি কাজ করবেন তত বেশিই অর্থ উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে।

সাধারণ ভাবে বলতে গেলে ইন্টারনেট ভিত্তিক স্ক্যামিং বা প্রতারণা ছাড়া যত অর্থ উপার্জনের প্রক্রিয়া রয়েছে, তার সব কিছুই ফ্রিল্যান্সিং এর অন্তর্ভূক্ত।

তবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করার মাধ্যমে যেই অর্থ উপার্জন হয় তাকেই সমাজের অনেক মানুষ ফ্রিল্যান্সিং মনে করে।

কিন্তু বিষয়টা এমন নয়।

আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে এবং সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও যদি কোন সার্ভিস দিয়ে অনলাইন থেকে ইনকাম করেন, তবুও সেটা ফ্রিল্যান্সিং ইনকাম এর অন্তর্ভূক্ত হবে।

Freelancing বিষয়ে আরো জানুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে করতে হয়? 

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের নাম নয়। এই শব্দটির মাধ্যমে অনলাইন জব এর পুরো সেক্টরকে বুঝানো হয়।

অর্থাৎ, সাধারণ ভাবে আমরা যেটাকে ‘চাকরি’ বলে থাকি, ইন্টারনেটের ভাষায় সেটিকেই ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়।

Freelancing করার জন্য আপনাকে এমন কোন কাজ শিখতে হবে, যেই কাজ অনলাইনে করা যায়।

আপনি যদি কাজ জানেন, তবে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র প্রাক্টিকেল কিছু নলেজ আয়ত্ব করতে হবে।

উদাহরণস্বরূপঃ

মনে করুন, আপনি বাইক চালাতে জানেন। কিশোরগঞ্জ থেকে বাইক দিয়ে কিভাবে ঢাকা যাবেন তা জানার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র রাস্তা চেনার প্রয়োজন হবে।

ঠিক একইভাবে আপনার যদি কোন কাজের স্কিল থাকে তবে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য শুধুমাত্র রাস্তাটা চেনার প্রয়োজন হবে।

এরচেয়ে বেশি কিছু না।

চলুন জেনে নিই কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো বা ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব।

ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায়

শুরুতেই বলেছি ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনাকে প্রথমেই কাজ শিখতে হবে।

আপনি যদি কাজ জানেন তবে ফ্রিল্যান্সিং শেখাটা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে।

ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তারমধ্যে কিছু পেইড এবং কিছু ফ্রি পদ্ধতি উল্লেখ করা যেতে পারে।

উদাহরণস্বরূপঃ

  • ফ্রিল্যান্সিং শেখার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া।
  • ভিডিও কোর্স দেখে ফ্রিল্যান্সিং শেখা।
  • লাইভ প্রশিক্ষণ নেওয়া।
  • ইউটিউব ভিডিও দেখে ফ্রিল্যান্সিং শেখা।
  • ওয়েবসাইট আর্টিকেল পড়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা।
  • ফ্রিল্যান্সিং শেখার বই পড়ে ইত্যাদি।

এগুলো মধ্যে বিনামূল্যে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ওয়েবসাইট আর্টিকেল ও ইউটিউব ভিডিও হলো সেরা।

তবে যেভাবেই শিখেননা কেন, মনোযোগ দিয়ে শিখলে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে সর্বোচ্চ ০ দিন লাগবে।

যেই বন্ধুরা বলেন ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, তারা এই পদ্ধতি গুলো ফলো করলেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে যেই সময়টুকু ব্যয় হয়, তা শুধুমাত্র কাজ শেখার পেছনেই ব্যয় হয়।

আমি কোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে Freelancing শিখিনি।

গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখেছি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে, ওয়েব ডিজাইন ও এসইও শিখেছি ভিডিও কোর্স দেখে।

তবে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কোন কোর্স বা কোন প্রশিক্ষণ নেইনি।

নিজের পরিশ্রম ও সাধানার মধ্য দিয়েই ফ্রিল্যান্সিংকে আয়ত্ব করেছি।

তবে Freelancing বিষয়টা বুঝার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়েছি এবং ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখেছি।

আপনি যদি কোন ফ্রিল্যান্সিং শেখার প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে যান বা অন্যান্য কোন ভাবে শিখতে চান, আপনাকে শুরুতেই যে কোন বিষয়ের কাজ শেখানো হবে।

বারবার কাজের কথা এজন্যই বলছি, ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কাজ বা স্কিলের গুরুত্ব সবার শীর্ষে।

ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন, সেই ধরণের কিছু কাজের বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো।

ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়?

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

এই প্রশ্নের সাধারণ জবাব হলো কম্পিউটার দিয়ে যত ধরণের কাজ করা সম্ভব, তার সব কিছুই ফ্রিল্যান্সিং এর উপযুক্ত।

তবে মেজর ক্যাটাগরি গুলো হলোঃ সফটওয়্যার ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, অ্যাপস ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি।

আপনারা অবশ্যই জানেন, এই মেজর ক্যাটাগরি গুলোর মধ্যে অগণিত সাব ক্যাটাগরি রয়েছে।

আর এই সবগুলো ক্যাটাগরিই ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অত্যন্ত চাহিদা সম্পূর্ণ।

তবে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি তার নির্দিষ্ট জবাব দেওয়া দেওয়াটা অযুক্তিক মনে হয়।

কারণ, ফ্রিল্যান্সিং শুধুমাত্র একটি বিশেষ কোন ক্যাটাগরির উপর নির্ভরশীল নয়।

তবে ধারণার জন্য কয়েকটি ক্যাটাগরির কথা বলা যেতে পারে।

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • কম্পিউটার প্রোগ্রামিং
  • ওয়েব ডিজাইন
  • ডিজিটাল মার্কেটিং

ফ্রিল্যান্সিং জগতে এই চারটি ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বেশী কাজ করা হয়।

এগুলোর মধ্যে চাহিদার দিক দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনকে সবার উপরে রাখা যায়।

আর ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন, সেটি হলো “কম্পিউটার প্রোগ্রামিং“।

আপনি যদি অতি অল্প সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে চান, তবে গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো সবচেয়ে সহজ ক্যাটাগরি।

কারণ, গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে কোন প্রোগ্রামিং বা কোডিং নলেজ এর প্রয়োজন হয় না।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন?

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

নতুন বন্ধুদের মধ্যে অনেকই আছেন যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন, কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি কি প্রয়োজন এবং কিভাবে শুরু করবেন।

প্রাথমিক ভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য ৩ টি বিষয়ের প্রয়োজন হয়।

() কম্পিউটারে করা যায় এমন কাজের উপর নিজের স্কিল ডেভেলপ করতে হবে।

(২) একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর প্রয়োজন হবে।

(৩) ইন্টারনেট এর প্রয়োজন হবে।

এই তিনটি বিষয় যদি আপনার কাছে থাকে, তবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য রেডি।

অনেকেই বলেন, ভাই আমার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার কোন উপায় আছে কী?

মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়, এটি অসম্ভব কিছু নয়।

তবে মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করার খুব বেশি ক্যাটাগরি আপনি পাবেন না।

মোবাইল দিয়ে আয় করার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়ুনঃ ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার সেরা উপায়

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ

প্রিয় পাঠক,  ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো তার উপর আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে সাবলীল ভাবে গাইড দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

তবে হয়ত ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য দুনিয়ার সব থেকে বড় গাইডলাইনটি দিতে পারিনি।

তবে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এর লক্ষ্য নিয়ে গাইডটি ফলো করেন, তবে অল্প সময়েই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ করার মাধ্যমে নিজের জন্য চমৎকার একটি জীবিকা নির্বাহের সুযোগ তৈরি করতে পারবেন।

“কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো” এই বিষয়ে যদি আপনার আরো কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। সাধ্য অনুযায়ী আপনাকে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.