২০২৩ সালে ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কেমন হবে?

ওয়েবসাইট তৈরির খরচ

প্রযুক্তির এই যুগে নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য বা কাঙ্খিত সার্ভিস টার্গেট কাস্টোমারদের কাছে সহজেই পৌঁছে দিতে বা নিজের পার্সোনালিটি দর্শকদের কাছে তুলে ধরার জন্য ওয়েবসাইটের বিকল্প নেই। আপনার যদি একটি পার্সোনাল ওয়েবসাইট থাকে, তবে আপনি খুব সহজেই নিজের কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন। অনেকের প্রশ্ন হলো ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত হয়?

বর্তমানে শিক্ষিত এবং সচেতন সমাজের প্রায় মানুষেরই এক বা একাধিক ওয়েবসাইট রয়েছে। বিশেষ করে যারা অনলাইন বাণিজ্যের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে, তাদের কেহই পিছিয়ে নেই। তবে অনলাইনে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ছাড়াও হাজার হাজার মানুষের পার্সোনাল ওয়েবসাইট রয়েছে। যেগুলোতে নিজের ভালোলাগা বিষয়বস্তু তার ভক্ত বা দর্শকদের কাছে বিভিন্ন উপায়ে উপস্থাপন করছে।

তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, বাংলাদেশে অনলাইন ইনকাম বিষয়টি যখন থেকে প্রচার-প্রসার হতে শুরু করলো, তখন থেকে নতুনদের মাঝে ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়টা তুমুল ভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন সকলেই জানি, একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়।

যাইহোক, অনেকেই জানতে চান যে, ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত টাকা লাগে এবং ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে? তাদের জন্যই সাবলিল ভাষায় কিছু আলোচনা ও নির্দেশনা। চলুন প্রথমেই কিছু বেসিক বিষয় জেনে নিই।

কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়

পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রথমেই আপনাকে জানতে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন। আপনি যখন ওয়েবসাইট তৈরির খরচ বের করতে যাবেন, তখন আপনাকে কিছু বিষয় জানতেই হবে।

যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরির জন্য যা যা প্রয়োজন হয়ঃ

  • ডোমেইন এক্সটেশন
  • ওয়েব হোস্টিং
  • থিম

ডোমেইন এক্সটেশন

ডোমেইন এক্সটেশন বিভিন্ন প্রকারের হয়। আপনার কাঙ্খিত বিষয় এবং চাহিদার ভিত্তিতে ডোমেইন এক্সটেশন নেবেন। ডোমেইন এক্সটেনশন বলতে .com / .net /.info / .org /.tech /.io ইত্যাদি। আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম নামের সাথে যখন এই ধরণের এক্সটেনশন গুলো যুক্ত হয় তখন যেটা ডোমেইনে পরিণত হয়। ডোমেইন সম্পর্কে আরো জানতে পড়ুনঃ ডোমেইন কি?

ওয়েব হোস্টিং

একটি ওয়েবসাইটের সমস্ত কন্টেন্ট, ফাইল, ফোল্ডার, ডিজাইন ইত্যাদি রাখার জন্য ডেটাবেজ এর প্রয়োজন হয়। আর ডেটাবেজ রাখার জন্য ওয়েব হোস্টিংয়ের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত বিষয় ওয়েব হোস্টিয়ের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকে এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে তা বিভিন্ন স্থান থেকে এক্সেস করা হয়। হোস্টিং সম্পর্কে আরো জানুনঃ ওয়েব হোস্টিং কি?

থিম

থিম হলো আপনার ওয়েবসাইটের বাহ্যিক অবকাটামো বা রূপ। আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর যে ডিজাইনটি দেখতে পারছেন, এটিই মূলত থিম। যে কোন ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য থিম এর প্রয়োজন হয়।

ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত?

প্রযুক্তির কল্যাণে এখন প্রায় সকল বিষয় বা ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। ওয়েবসাইটের ধরণ ও ফিচারের উপর ভিত্তি করে মূলত ওয়েবসাইট তৈরির খরচ নির্ণয় করতে হয়। তাছাড়া, ডোমেইন এক্সটেশন, হোস্টিং, থিম, ওয়েব ডেভেলপার এবং কোয়ালিটির বিবেচনায় খরচটা কম-বেশী হয়।

ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে খরচ

আপনি যদি খুবই সিম্পল একটি পার্সোনাল ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান, তবে আপনারকে খুব বেশী টাকা খরচ করতে হবে না। মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যেই একটি ভালো মানের ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।

নিউজ ওয়েবসাইট তৈরি করতে খরচ

নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইট গুলো ব্লগ সাইটের তুলনায় সামান্য বেশী ফিচার সমৃদ্ধ হয়। তাই যে সিম্পলের মাধ্যমে একটি নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। তবে আপনার নিউজ পোর্টালের ফিচারের উপর ওয়েবসাইট তৈরির খরচটা কম-বেশী হতে পারে।

ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে খরচ

ই-কমার্স বাণিজ্য পরিচালনার জন্য যে ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়, তা নিঃসন্দেহে ব্লগ বা নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইটের চেয়ে অনেক বেশী ফিচার সমৃদ্ধ হয়। কারণ, এই ধরণের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ডিজাইনের পেজ এবং গ্রাহকের তথ্য ম্যানেজের জন্য অপশন প্যানেল তৈরি করতে হয়। সহজ ভাষায় একটি ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে খরচ হবে ৮ থেকে ২ হাজার।

তবে অনেক সময় ওয়েবসাইট তৈরি করার খরচটা ০ থেকে ২০ হাজার + হতে পারে। এটা মূলত ওয়েবসাইটের হোস্টিং, থিম এবং ফিচারের ভিত্তিতে হতে পারে। তাছাড়া, প্রো লেভেলের অভিজ্ঞ ডেভেলপারদের দিয়ে কাজ করাতে গেলে যে কোন ওয়েবসাইট তৈরির জন্য তাদের বেসিক খরচটাই ০ হাজার + হয়ে যাবে।

সাধারণ প্রশ্নঃ

(১) প্রশ্নঃ ওয়েবসাইট তৈরির জন্য কতজিবি হোস্টিং নেওয়া উচিত?

উত্তরঃ প্রাথমিক পর্যায়ে ডাউনলোড ওয়েবসাইট ব্যতীত যে কোন ধরণের ওয়েবসাইটের জন্য ৫ জিবি হোস্টিং নিলেই যথেষ্ট।

(২) প্রশ্নঃ ওয়েবসাইটের জন্য কী ধরণের হোস্টিং নেবো?

উত্তরঃ প্রাথমিক পর্যায়ে যে কোন ওয়েবসাইটের জন্য শেয়ার হোস্টিং নিতে পারেন। ভিপিএস হোস্টিং নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কেননা, ভিপিএস হোস্টিংয়ের তুলনায় শেয়ার হোস্টিংয়ের দাম কম হয়ে থাকে। তবে যাদের বাজেট আছে এবং ভিপিএস হোস্টিং পছন্দ তারা ভিপিএস হোস্টিং নিতে পারেন।

(৩) প্রশ্নঃ আমার জন্য ডোমেইন এক্সটেনশন কোনটা ভালো হবে?

উত্তরঃ .com এক্সটেনশন সবচেয়ে ভালো। তবে আপনার যদি .net /.info / .org /.tech /.io ইত্যাদি পছন্দ হয় তবে এগুলোও নিতে পারেন।

বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি

আপনার হাতে যদি বাজের একবারেই না থাকে, তবে চাচ্ছেন যে আপনার জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে, এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন Web 2.0 ওয়েবসাইটের সাহায্যে নিজের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারেন।

Web 2.0 ওয়েবসাইট তৈরি করতে কোন প্রকার টাকা পয়সার প্রয়োজন নেই। জনপ্রিয় Web 2.0 সাইট হলোঃ

আপনি চাইলে উপরোল্লিখিত প্লাটফর্মগুলো ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনার জন্য এক বা একাধিক ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। এই প্লাটফর্ম গুলো থেকে ওয়েবসাইট তৈরি করলে সারা জীবন আপনি ফ্রিতেই ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারবেন।

তাছাড়া, এই প্লাটফর্ম গুলো আপনাকে এমন একটি সুবিধা দিচ্ছে, হা হলো ফ্রি ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই বিভিন্ন উপায়ে আপনি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এমন আরো হাজার হাজার প্লাটফর্ম আছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরির জন্য আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন প্লাটফর্ম বেছে নিতে পারেন।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ

পূর্বেই সবাইকে অবগত করা হয়েছে যে, ওয়েবসাইটের ধরণ, ফিচার, ডোমেইন এক্সটেনশন, হোস্টিং কোয়ালিটি এবং ওয়েব ডেভেলপার সিলেকশনের উপর ভিত্তি করে ওয়েবসাইট তৈরির খরচ নির্ণয় করতে হয়। তবে আপনি যদি নিজেই ওয়েবসাইট তৈরি করতে জানেন, তবে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করে নিয়েই আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।

আশা করছি ওয়েবসাইট তৈরির খরচ সম্পর্কে আপনি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। আপনার যদি ওয়েবসাইট তৈরির কোন বিষয় নিয়ে সংশয় থাকে, তবে কমেন্ট করতে পারেন। আর ওয়েবসাইট তৈরির জন্য প্রফেশনাল সাপোর্ট প্রয়োজন হলে এখানে যোগাযোগ করুন

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.