শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার ও গুরুত্ব: ইন্টারনেট (Internet) আসার পর শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবনের প্রতিটি অঙ্গনেই তৈরি হয়েছে নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা। শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকাও অনস্বীকার্য বটে। যারা ইন্টারনেটে শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন তারা অবশ্যই বুঝেন।
তবে অনেক মানুষ আছে যারা শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের গুরুত্ব ও ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এখনও তেমন অবগত নয়। তাই তাদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষা জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহারকে অপকারিতা হিসেবেই চিহ্নিত করেন।
তবে এটা সত্য যে, ইন্টারনেটের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়টাই রয়েছে। আবার ঢালাও ভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকার কথা অস্বীকার করাও যাবে না।
আপনি যদি একজন জ্ঞান পিপাসু শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, তবে নিজস্ব জ্ঞান ভাণ্ডারকে সহজেই সমৃদ্ধ করতে ইন্টারনেট এর ব্যবহার আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছি শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে। শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার কতটুকু সুবিধাজনক এবং এর প্রয়োজনীয়তা কেমন চলুন আদ্যোপান্ত জেনে নেওয়া যাক।
Table of Contents
শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকা
চাকরিক্ষেত্র থেকে শুরু করে ব্যাংকিং, ব্যবসা -বাণিজ্য সহ প্রায় সবকিছুই ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছে। ঠিক তেমনীভাবে শিক্ষার প্রাচীন পদ্ধতির সংস্কার ঘটেছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
আধুনিক শিক্ষার অবকাঠামো তৈরি হয়েছে কম্পিউটার কেন্দ্রিক। তাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে পাঠদানের বিভিন্ন ধরণের এপ্লিকেশন সফটওয়্যার।
উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও গবেষণা কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার সফলতা দেখা যায়। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ও পুরো ভারতবর্ষও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও গবেষণা কেন্দ্রিক শিক্ষার দিকে মনোনিবেশ করেছে।
তবে মূলত করোনা মহামারির কারণে ইন্টারনেটের গুরুত্বটা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার কারণে প্রায় ২ বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবুও কিন্তু শিক্ষাদান থেমে থাকেনি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে চলছে পাঠদানের নিয়মিত মহড়া।
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনেই ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ক্লাস হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাড়িতে বসেই কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং মোবাইলের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ক্লাস গুলোতে জয়েন করতে পারছে। এটা মূলত ইন্টারনেটের অগ্রগতির কারণেই সম্ভব হয়েছে।
করোনা মহামারিতে যদি ইন্টারনেট এর ব্যবহার না করা হতো, তবে হয়ত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যেতো। যা ছাত্র সমাজের মাঝে খুবই ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতো!
করোনার আগেই Facebook এবং YouTube সহ অনলাইনে ভিডিও টিউটোরিয়াল ভিত্তিক বিভিন্ন ধরণের শিক্ষাদানের প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে। তাছাড়া, ই-লার্নিং ওয়েবসাইট এবং এপ্লিকেশনও ছিল।
সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, করোনার লকডাউনের কারণে এই সমস্ত অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষাদানের প্ল্যাটফর্মের দিকে শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা এমন ভাবে ঝুঁকছে যে, ইন্টারনেটের ইতিহাসে আগে তা কখনই ঘটেনি।
শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার মূলত শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রগতিশীলতা ও দ্রুততা এনে দিয়েছে। বর্তমানে প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে ইন্টারনেটের প্রভাব তুমুলভাবে বিস্তার করছে।
ইন্টারনেটের ব্যবহার এবং ডিজিটাল জীবনশৈলী
শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। আবার অসুবিধাও রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি শুধুমাত্র শিক্ষার জন্যেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে তারজন্যে ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণ করা উচিত।
আবার কোনো শিক্ষার্থী যদি শিক্ষার বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে ইন্টারনেট চালাতে চায় তবে তাকে ইন্টারনেটের অপকারিতা গ্রাস করতে পারে। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ডিজিটাল জীবনশৈলীর প্রতি মনোনিবেশ করা প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের জন্যই কাম্য। তবে নীতি নৈতিকতার মধ্য দিয়েই পথ চলতে হবে।
কারো শিক্ষা জীবনে ইন্টারনেটের প্রভাব যদি কল্যাণমুখী হয় তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই যুগে তাকে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারের সুবিধা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ১০টি ব্যবহার ও উপকারিতা
প্রযুক্তির এই যুগে সম্প্রতি সারা বিশ্বেই শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের প্রয়োগ বাড়ছে। এতে করে জ্ঞানার্জনে চলে এসেছে সহজলভ্যতা। ইন্টারনেট অনেক সমৃদ্ধ একটি তথ্য ভাণ্ডার। যেখানে শিক্ষা বিষয়ক প্রায় সকল প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যায়।
শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃজনশীলতা বৃদ্ধিকরণে ইন্টারনেট এর বেশকিছু উপকারিতা রয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের 10 টি ব্যবহার নিচে তুলে ধরা হলোঃ-
১. ইন্টারনেট ভিত্তিক শিক্ষা বহুলাংশে সাশ্রয়ী
বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝে প্রায় অনেকটা মিল রয়েছে। এই দুটি দেশের সাধারণ মানুষের জাতীয় কর্মই হলো কৃষিকাজ এবং অর্থনৈতিক ভাবে বেশীরভাগ পরিবারই দরিদ্র।
বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য বইপুস্তক ফ্রি করার পাশাপাশি ইন্টারনেট ভিত্তিক শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন ধরণের প্রদক্ষেপ নিচ্ছে। ভারতেও ডিজিটাল ইন্ডিয়া মুভমেন্টের পরে শিক্ষার প্রসারে ইন্টারনেট ভিত্তিক শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করেছে।
ইন্টারনেট ভিত্তিক শিক্ষা প্রায় সবদিক দিয়েই অত্যন্ত সাশ্রয়ী। অর্থের দিক দিয়ে যেমন সাশ্রয়ী, ঠিক তেমনীভাবে সময় সাশ্রয়ীও বটে। শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষা যেহেতু একটি দেশের প্রগতির জন্য অপরিহার্য বিষয়, সেহেতু শিক্ষার্জনে সহজলভ্যতা নিয়ে আসা ছাত্র সমাজকে উন্নতি করার এক চূড়ান্ত অভিনব কৌশল।
শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার করার মানেই হলো জ্ঞানার্জনে সহজলভ্যতা। কেননা, উন্নত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই এই প্রদক্ষেপে সফলতা অর্জন করেছে।
২. বিশ্বমানের শিক্ষক দ্বারা পাঠদান
ইন্টারনেটে লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট এবং সফটওয়্যার ভিত্তিক পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এই ওয়েবসাইট গুলো বা সফটওয়্যারগুলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সফল এবং প্রকৌশলী মানুষের মাধ্যমে অপারেট হচ্ছে।
তারা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে ইনফরমেশন শেয়ার করছে, যা শিক্ষার্থীদের বাস্তবমুখী জ্ঞানে সমৃদ্ধ করবে।
তাছাড়া ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরণের ই-লার্নিং টুলস রয়েছে, যা ব্যবহার করে শিক্ষাথীরা নিজেরাই বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
৩. একাডেমিক শিক্ষার পাঠদান
করোনা মহামারির কারণে মূলত একাডেমিক শিক্ষার পাঠদান ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার লকডাউনে প্রায় ২ বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবুও কিন্তু একাডেমিক পাঠদান পুরোপুরিভাবে থেমে থাকেনি।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পাঠদানের ক্লাস চলছে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাড়িতে বসেই কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং মোবাইলের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ক্লাস গুলোতে জয়েন করতে পারছে।
এটা মূলত ইন্টারনেটের অগ্রগতির কারণেই সম্ভব হয়েছে। করোনা মহামারিতে যদি ইন্টারনেট এর ব্যবহার না করা হতো, তবে প্রায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যেতো। যা ছাত্র সমাজের মাঝে খুবই ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতো!
বর্তমানে কলেজ -ভার্সিটি ছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার শুরু হয়েছে। অভিভাবকরা যদি শিক্ষার্থীদেরকে সঠিক ভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের গাইড দেয় এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীই ইন্টারনেটের উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারবে।
৪. সময়োপযোগী তথ্যের উপলব্ধতা
ইন্টারনেটকে বলা হয় তথ্যের সমুদ্র। ইন্টারনেটে এতো বেশী তথ্য সংরক্ষিত আছে যা পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই।
একজন শিক্ষার্থীর জন্য যেই ধরণের তথ্য জানার প্রয়োজন তার চেয়েও বেশী তথ্য ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ডেটাবেজে বিদ্যমান।
আপনি এই মূহুর্তে কী জানতে চান? গুগলে সার্চ করুন। নিশ্চয় আপনার প্রশ্নের উত্তর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আপনার সামনে এসে হাজির হবে।
বিষয়টা কত অদ্ভূত মনে হচ্ছে তাইনা? একটি সময় ছিল, যখন কোনো প্রশ্নের উত্তর বা কোনো সমস্যা সমাধানের জন্যে অনেক কষ্ট করে দূরের কোনো বিদ্বান ব্যক্তির কাছে যেতে হতো। তাও অনেক সময় সঠিক উত্তর বা সমস্যার সমাধান পাওয়া যেতো না।
কিন্তু ইন্টারনেটে এই সমস্ত প্রশ্নের একাধিক উত্তর রয়েছে। আবার যে কোনো সমস্যারও একাধিক সমাধান রয়েছে। তাই সময়োপযোগী তথ্যের জন্য ইন্টারনেট এর ব্যবহার অনেক কার্যকরী।
৫. নিরবিচ্ছিন্ন শিক্ষক-ছাত্র সংযোগ
ইন্টারনেট আসার আগে স্কুল- কলেজের ক্লাসের পাঠদান শেষে শিক্ষার্থীদের মনে যদি নতুন করে কোনো প্রশ্নে উদ্ভব হতো অথবা ক্লাসের পড়া যদি না বুঝতো তবে তা শিক্ষক কর্তৃক সমাধানের ক্ষেত্রে পরবর্তী ক্লাসের জন্য অপেক্ষা করতে হতো।
তবে শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার শুরু হওয়ার কারণে এখন আর তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। এখন যে কোনো সময় ইন্টারনেটের যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষকের হেল্প নেওয়া যায়।
বর্তমানে শিক্ষক-ছাত্র প্রায় সকলেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। এতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ থাকে এবং উভয়ের মধ্যেই বন্ধুত্বপূর্ণ ভাব সৃষ্টি হয়।
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ জ্ঞানার্জনে গতি তৈরি করে। তাছাড়া, ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে অভিভাবকেরা খুব সহজেই শিক্ষকদের মাধ্যমে পরামর্শ আদান- প্রদান করতে পারে।
৬. শিক্ষায় মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার
বর্তমানে সহজ পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের চমৎকার একটি পদ্ধতি হলো মাল্টিমিডিয়া। এটি ইন্টারনেট কেন্দ্রিক একটি আবিস্কার।
শিক্ষা ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়ার বিশেষ প্রভাব রয়েছে। গবেষকদের মতে দৃশ্য-শ্রাব্য কনটেন্ট পড়াশোনা মনে রাখতে শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
এজন্যই উন্নত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতেই মাল্টিমিডিয়াকে গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করা হয়।
৭. বাস্তব ও কর্মমূখী শিক্ষাদান
আমরা সাধারণত একাডেমিক ভাবে যেই শিক্ষা অর্জন করি, তার অনেক কিছুই বাস্তব জীবনে প্রয়োজনে আসে না। ক্যারিয়ার জীবনেও অনেকের জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই বাস্তব ও কর্মমূখী শিক্ষার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্বের মানচিত্রে যেই দেশগুলো সবচেয়ে বেশী উন্নত করতে পেরেছে তাদের বেশীরভারই বাস্তব ও কর্মমূখী শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করেছে।
ইন্টারনেট এমন একটি বিষয়, আপনি পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকেই বিশ্ব মানের প্রকৌশলীদের মাধ্যমে বাস্তব ও কর্মমূখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন।
বাস্তব ও কর্মমূখী শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার আপনাকে ক্যারিয়ার জীবনে সহজে সফল হওয়ার পথ দেখাবে।
৮. শিক্ষার গতি বৃদ্ধিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার
ইন্টারনেট এর ব্যবহার শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিযোগি হওয়ার আগ্রহ যোগায়।
যেই শিক্ষার্থীরা জ্ঞানার্জনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তারা অন্যান্য সকল শিক্ষার্থীদের থেকে একটু আলাদা হয়। কারণ, ইন্টারনেটে যেই পরিমাণ তথ্য রয়েছে, তা অন্য কোথাও থেকে জানা পসিবল না।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিক্ষার্থী প্রায় সবসময় নতুন নতুন জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতেই থাকে। এটা শিক্ষার গতিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
৯. ইন্টারনেটে পরীক্ষার রেজাল্ট দেখা যায়
শিক্ষার্থীদের সাফল্য অর্জন এবং পড়াশোনার অগ্রগতিতে বোর্ড কর্তৃক পরীক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটি নির্দিষ্ট সময় শিক্ষাদানের পর প্রতিটি ক্লাসের জন্য একটি পরীক্ষার আয়োজন থাকে।
শিক্ষার্থীরা জ্ঞানার্জনে কতটুকু সফল হয়েছে তা পরীক্ষার রেজাল্টের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। এই বিষয়ে সবাই জানেন।
পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট জানার জন্যে এখন আর কষ্ট করে প্রতিষ্ঠা যেতে হয় না। প্রত্যেক বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট এখন ইন্টারনেট থেকেই জানা যায়।
১০. ট্রাভেল বা শিক্ষা সফরে ইন্টারনেট
শিক্ষার্থীদেকে প্রায় সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ”শিক্ষা সফরে” নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক সময় এমন হয় যে, শিক্ষা সফরের লোকেশন নির্ধারণ করা অনেকটা কঠিন হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে ইন্টারনেট শিক্ষা সফরের লোকেশন নির্ধারণ করতে বেশ উপযোপী। আবার ইন্টারনেট ব্যবহারে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে সঠিক লোকেশন নির্ণয় করা যায়।
তাছাড়া, শিক্ষার্থীরা যদি নিজ উদ্যোগে ট্যুর, ট্রাভেল বা শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে কোথাও সফর করার ইচ্ছে করে, তবে সফরের আগেই লোকেশনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অবগত হতে পারে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ২টি অপকারিতা
শিক্ষায় ইন্টারনেটের গুরুত্ব রয়েছে এটা সত্য। তবে এটাও মনে রাখতে হবে ইন্টারনেটের জঘন্যতম কিছু অপকারিতাও রয়েছে। যা শুধু শিক্ষার্থীই নয়, যে কোন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্যই এগুলো চিন্তার কারণ।
১. ইন্টারনেট আসক্তির কুফল
করোনা মহামারিতে স্টুডেন্টদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়া এবং শিক্ষার সু্বিধার্থে বাবা -মা কম্পিউটার /ল্যাপটপ / মোবাইল কিনে দিয়েছে।
অনেক বাবা -মায়ের অভিযোগ হলো অনলাইন ক্লাস শেষ হলেও বাচ্চারা ইন্টারনেট চালায় এবং বিভিন্ন গেম খেলায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ সময় এভাবেই বাচ্চারা সময় কাটায়।
শিক্ষার্থীদের জন্য এটা অবশ্য কাম্য নয়। এভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ অনেকটা কমে আসে এবং দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করার কারণে মস্তিষ্কে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
২. শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি
যে কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস একটানা দীর্ঘ সময় ব্যবহার করার ফলে ব্যবহারকারীর মধ্যে একটি মানসিক চাপ তৈরি হয়। যা স্বাস্থ্যের পক্ষ্যে মোটেও ভালো না।
তাছাড়া, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল এবং টিভি ইত্যাদির স্ক্রিনে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকার কারণে চোখ আদৃশ্য রশ্মিতে বেশ ক্ষতিগ্রন্থ হয়।
সর্বক্ষণ ইন্টানেটের ব্যবহার ডেকে আনতে পারে নানা ধরণের বিপদ। তাই শিক্ষার্থীদেরকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
উপসংহারঃ
শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার যেমন যুক্তিসম্মত, ঠিক তেমনই যুগান্তকারী প্রদক্ষেপও বটে। তবে শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই সময় মেইন্টেন্ট করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে।
বিশেষ কোনো প্রয়োজন না থাকলে ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা, অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। বেশী সময় ধরে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ।
তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকার কথা অস্বীকার করা যাবে না। তাছাড়া, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে শিক্ষা জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে গেছে।
প্রিয় পাঠক, শিক্ষায় ইন্টারনেটের গুরুত্ব আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। প্রতিবেদনটি আজ এখানেই শেষ করছি। আশাকরি আপনার কাছে ভালো লেগেছে।
Add comment