সাধারণ জ্ঞান

মহাকর্ষ বল কাকে বলে? নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র

মাধ্যাকর্ষণ প্রকৃতির একটি মৌলিক শক্তি যা মহাবিশ্বের বস্তুর আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। মহাকর্ষ বল কাকে বলে এবং নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

মহাকর্ষীয় শক্তি মহাবিশ্বের সবচেয়ে মৌলিক এবং ব্যাপক শক্তিগুলোর মধ্যে একটি। এটি গ্রহ, নক্ষত্র এবং ছায়াপথের গতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদেরকে ভূপৃষ্ঠে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখে।

এই ব্লগে আমরা জানবো, মহাকর্ষ বল কাকে বলে, মহাকর্ষীয় শক্তির প্রকৃতি, কীভাবে এটি গণনা এবং পরিমাপ করা হয় এবং মহাজাগতিক বিস্ময়-অনুপ্রেরণাদায়ক শক্তির রহস্যগুলো অনুসন্ধান করার চেষ্টা করবো।

মহাকর্ষ বল কাকে বলে?

মহাকর্ষ হলো পৃথিবীর উপর প্রযুক্ত একটি বল। এটি বস্তুতে মাথার সাথে আকর্ষণ বিদ্যমান করে এবং এর মাধ্যমে গুরুত্বাকর্ষণ সিদ্ধান্ত ব্যবহৃত হয়।

মহাকর্ষের সূত্র হলো নিউটনের গুরুত্ব সূত্র যা বস্তুর ভর এবং পৃথিবীর ব্যাসার্ধের উপর নির্ভর করে বিবেচিত হয়। এর মান প্রায় ৯.৮ মিটার/সেকেন্ড এর দ্রুতি হয়।

আরও পড়ুনঃ বিগ ব্যাং কি? বিগ ব্যাং তত্ত্বের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন

মহাকর্ষের প্রভাব পৃথিবী ও সমগ্র বিশ্বের কাছাকাছি অনেক বিষয়ে দেখা যায়, যেমন গ্রহণের পথ, তরঙ্গবিজ্ঞান, রকেট প্রযুক্তি, কণা পদার্থ বিজ্ঞান ইত্যাদি।

মহাকর্ষ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা এখন পর্যন্ত হয়েছে, এবং এটি মহাকর্ষের সূত্র নামক নিয়মের উপর ভিত্তি করে কাজ করে।

মহাকর্ষের সূত্রগুলি নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সাধারণত মহাকর্ষ বিষয়টি পদার্থবিদ্যা এবং ভৌতবিজ্ঞানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র কি?

নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র ভৌতবিজ্ঞানকে এক নতুন সম্ভবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ সকল সূত্র নিচে উপস্থাপন করা হলো –

F = G * (m1 * m2) / r^2

এখানে,
F = দুটি বস্তুর মধ্যে মহাকর্ষ বল।
G = গ্রবিটেশনাল কনস্ট্যান্ট (৬.৬৭৪৩ × ১০^-১১ N(m/kg)^2)।
m1 এবং m2 = দুটি বস্তুর ভর।
r = দুটি বস্তুর মধ্যে অবস্থানের দূরত্ব।

এই সূত্রে F একক হলো নিউটন (N), m একক হলো কেজি (kg), r একক হলো মিটার (m) এবং G একক হলো N(m/kg)^2.

আরও পড়ুনঃ শিখা পরীক্ষা কি? শিখা পরীক্ষায় hcl এর ব্যবহার

এই সূত্রটি দুটি বস্তুর মধ্যে গুরুত্বাকর্ষণ বল নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়। সূত্রটি প্রায় সকল কক্ষপথের গতি নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় এবং এর মাধ্যমে বিভিন্ন নিয়মকে ব্যাখ্যা করা যায়, যেমন গ্রহের উপগ্রহের চারণ ধারণকে।

মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ এর মধ্যে পার্থক্য

মহাকর্ষ এবং অভিকর্ষ উভয়ই বল বা বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ বিদ্যমান করে, কিন্তু দুটি বলের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। যা নিচে উপস্থাপন করা হলো। –

মহাকর্ষ বল

মহাকর্ষ বল হলো পৃথিবীর মধ্যে সমস্ত বস্তুর মধ্যে প্রতিকূল আকর্ষণ বল। অন্য কোনো বস্তু পৃথিবীর সাথে যখন সম্পর্ক করে তখন মহাকর্ষ বল উদ্ভূত হয় এবং দুটি বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে।

মহাকর্ষ বল এর কাজ হলো দুটি বস্তুকে একত্র আকর্ষণ করে তুলে ধরা। মহাকর্ষ বল একটি প্রাকৃতিক বল যা পৃথিবী ও পৃথিবীর উপর থাকা সব পদার্থগুলোর মধ্যে কাজ করে।

মহাকর্ষ বল এর কারণে গ্রহ-পৃথিবী আবদ্ধ রয়েছে এবং এটি বিভিন্ন প্রাণীর চলনকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এছাড়াও মহাকর্ষ বল এর মাধ্যমে আকাশগমন সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ লিনাক্স ও উইন্ডোজ এর পার্থক্য (Linux VS Windows)

মহাকর্ষ বলের মাধ্যমে গ্রহের চারদিকে পাঠানো স্পেস মিশন এবং উপগ্রহ এবং উপযুক্ত যন্ত্রপাতি স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। মহাকাশ স্টেশনও মহাকর্ষ বলের কারণেই স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।

অভিকর্ষ বল

অভিকর্ষ বল দুটি বস্তুর মধ্যে প্রতিকূল বল যা দুটি বস্তুকে আলাদা করে ফেলে। মহাকর্ষ বল দ্বারা পৃথিবী ও অন্যান্য বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় যা দুটি বস্তুকে একত্র ধরে রাখে।

অভিকর্ষ বল হলো মহাকর্ষ বলের উল্টা বল যা দুটি বস্তুকে আলাদা করে ফেলে বা দুটি বস্তুর মধ্যে প্রতিকূল বল হিসেবে কাজ করে।

একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। ধরুন, একটি পৃথিবীর উপর একটি বস্তু রয়েছে। এই বস্তু পৃথিবীর কেন্দ্রকে আকর্ষণ দেখায়। একইভাবে, পৃথিবীও বস্তুকে আকর্ষণ করে এবং দুটি বস্তু একত্রে ধরে রাখে।

মহাকর্ষ ধ্রুবক এর মান কত?

মহাকর্ষ ধ্রুবক এর মান সাধারণত একই থাকে যা হলো G এবং এর মান হলো ৬.৬৭৪ × ১০^-১১ নিউটন-মিটার^2/কেজি^2। এটি স্থির একটি ধ্রুবক মান এবং সমস্ত বস্তুর মহাকর্ষ বলের মাপনে ব্যবহৃত হয়।

মহাকর্ষীয় বিভব ঋণাত্মক কেন?

মহাকর্ষ বিভব ঋণাত্মক হওয়ার কারণ হলো মহাকর্ষ বলের দিক যা সর্বদা আকর্ষণশীল দিক। অর্থাৎ, দুটি বস্তুর মধ্যে স্থানান্তর ঘটার সময় যদি একটি বস্তুর বিভব উল্টি হয় তবে মহাকর্ষ বল এর দিক উল্টি হয়।

শেষ কথাঃ

মহাকর্ষ বল মহাবিশ্বের একটি মৌলিক এবং শক্তিশালী শক্তি। এটি মহাকাশীয় বস্তুর গতিকে নিয়ন্ত্রণ করে, ছায়াপথের গঠন গঠন করে এবং মহাজাগতিক সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই শক্তি অধ্যয়ন করে, আমরা মহাবিশ্বের কাজ এবং এর মধ্যে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করতে পারি।

প্রিয় পাঠক, আমি আশা করছি মহাকর্ষ বল কাকে বলে এবং নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র সম্পর্কে আপনারা এই ব্লগ থেকে জানতে পেরেছেন। এই বিষয়ে আরো তথ্য দিয়ে আপনিও আমাদের সহযোগিতা করতে পারেন।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে, তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
× How can I help you?

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker!